চামড়া সংগ্রহে অর্থ, লবণ, শ্রমিক প্রস্তুত: বিটিএ চেয়ারম্যান

কোরবানি ঈদে চামড়া সংগ্রহে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, লবন মজুদ ও কর্মী-শ্রমিক প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2021, 06:38 PM
Updated : 20 July 2021, 06:50 PM

আগের দুবছরের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে এবার চামড়া খাত সংশ্লিষ্টরা আগেভাগেই কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন।

বুধবার করোনাভাইরাস মহামারীকালে দ্বিতীয়বারের মত উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসবের একটি ঈদুল আজহা। এই ঈদে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা পশু কোরবানি করে থাকেন।

এসময় সংগ্রহ করা চামড়ার গুনগত মান অনেক ভালো থাকে বলে ট্যানারিগুলো এই সময়ের অপেক্ষাতেও থাকেন। দেশে বছরজুড়ে যে পরিমাণ চামড়া পাওয়া যায় তার অর্ধেকের বেশি আসে কোরবানির পশু থেকে।

অন্যবারের মত এবারও দেশে প্রায় এক কোটি পিস পশুর চামড়া সংগ্রহের আশা করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

বিপুল এই চামড়া স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রক্রিয়াকরণে ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাঠ পর্যায় থেকে ট্যানারিগুলো মূলত ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে সংগ্রহ করা কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াকরণ করবে।

এ জন্য এসব এলাকার মাদ্রাসাভিত্তিক যেসব উদ্যোক্তা চামড়া সংগ্রহ করবেন, তাদের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আর্থিক যোগান দেওয়া হয়েছে।”

এবার সবমিলে প্রায় ৯০ লাখ চামড়া সংগ্রহের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে আসা চামড়া প্রক্রিয়াকরণে প্রয়োজনীয় লবণ এবং কর্মী-শ্রমিকদের প্রস্তুত করা হয়েছে।“

ঢাকাভিত্তিক ট্যানারিগুলো পরে দেশের অন্যান্য আড়ত থেকে আসা লবণ দেওয়া চামড়া সংগ্রহ করবে।

ফাইল ছবি

এই খাতের ব্যবসায়ীদের আর্থিক সংকট কাটাতে ব্যাংক ঋণের বিষয়ে শাহীন আহমেদ বলেন, “এবার আমরা নতুন ব্যাংক ঋণ পাইনি। তবে গতবছর যে ৬৫ কোটি টাকা দিয়েছিল সেটা এবং আগের ৫৬৫ কোটি টাকার ঋণ পুন:তফশিলের মাধ্যমে এবছর ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। কারখানায় আসা ব্যবসায়ী ও ফড়িয়াদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য মাস্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

চামড়া শিল্পের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে জড়িত পুরান ঢাকার নবাবপুরের বাসিন্দা আফতাব উদ্দিন বলেন, “আমরা প্রস্তুতি সন্ধ্যার আগেই শেষ করেছি। কাল (বুধবার) সকালে আগে ট্যানারিতে যাব। এরপর ট্রাকে করে পুরান ঢাকার দুইটা মোবাইল সেন্টার থেকে আমরা চামড়া সংগ্রহ করব।”

এদিন রাত থেকেই এসব চামড়া ট্যানারিতে আনার পর লবণ দিয়ে সংরক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানান তিনি।

এবার আড়ত ও ট্যানারিগুলোর জন্য ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরু বা মহিষের চামড়ার দর ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত বছর এই দর ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।

ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরু বা মহিষের চামড়ার দাম হবে ৩৩ টাকা থেকে ৩৭ টাকা, গতবছর যা ২৮ থেকে ৩২ টাকা ছিল।

এছাড়া দেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা, আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গতবছর খাসির চামড়া ১৩ থেকে ১৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১০ থেকে ১২ টাকায় বেঁধে দিয়েছিল সরকার।