বন্ধ পাটকল: ঈদের আগে টাকা পাচ্ছেন ২১ হাজার শ্রমিক

কোরবানি ঈদের আগেই বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারি পাটকলের ২১ হাজার ৫৫২ জন ‘বদলি’ শ্রমিকের বকেয়া টাকা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজেএমসির চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2021, 01:32 PM
Updated : 15 July 2021, 01:32 PM

বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয় এসব শ্রমিকের পাওনা পরিশোধে ২১২ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।

এরপর এদিনেই বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে এই অর্থ ‘ব্যাংক চেক’ পরিণত করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় ও বিজেএমইসি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ফলে আগামী ঈদুল আজহার আগেই শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বকেয়া পাওনার অর্থ চলে যাবে বলে আশা করছেন বিজেএমসির চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ।

ধারাবাহিকভাবে লোকসানে থাকা দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়। এসব পাটকলের প্রায় ২৫ হাজার কর্মচারীর চাকরি ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের’ মাধ্যমে অবসায়নের সিদ্ধান্ত সরকারের তরফ থেকে জানানো হয় এর আগেই।

বৃহস্পতিবার বদলি শ্রমিকদের জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিজেএমসির বন্ধ ঘোষিত পাটকলগুলোর বদলি শ্রমিকদের জাতীয় মজুরি স্কেল’ ২০১৫ ও জাতীয় মজুরি স্কেল’২০১০-এর পার্থক্যজনিত বকেয়া পাওনা পরিশোধে এ অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

“বরাদ্দকৃত অর্থ শ্রমিকদের নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে দেওয়া হবে।”

এতে আরও জানানো হয়, অর্থ মন্ত্রণালয় 'পরিচালন ঋণ' বা 'অপারেশন লোন' হিসেবে এই টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।

“বরাদ্দকৃত অর্থ ২০২১-২২ অর্থবছরের বিজেএমসির অধীন ১৮টি মিলের ২১ হাজার ৫৫২ জন বদলি শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধ ছাড়া অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না।“

ফাইল ছবি

বিজেএমইসির চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বিডিনিউজ টোয়োন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদের আগেই শ্রমিকদের টাকা বিতরণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারই বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে ব্যাংক চেকে পরিণত করা হয়েছে।

“বাকি যে দুই কর্মদিবস রয়েছে তার মধ্যেই অবশিষ্ট কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।“

বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রত্যেক শ্রমিকের মিল প্রদত্ত টোকেন ও ইউনিক আইডি নম্বর, এনআইডি এবং ব্যাংক হিসাব থাকতে হবে। এনআইডি যাচাই করে ব্যাংক হিসাব-এর মাধ্যমে বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে।

কোনোভাবেই এনআইডি এবং ব্যাংক হিসাব ব্যতীত বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা যাবে না বলে বরাদ্দ সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে।

বদলি শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধকালে মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া পাওনার বিষয়টি সরকারি বিধি বিধানের আলোকে পুনরায় যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হয়ে পরিশোধ করবে বলেও মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, “বকেয়া পাওনা পরিশোধকালে পাওনার বিষয়ে কোনো অসঙ্গতি দেখা দিলে বিজেএমসি বা মিল কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে তা সংশোধন করবে। বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকারের বিদ্যমান বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে। বিধি বহির্ভূতভাবে কোনো অর্থ পরিশোধ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন।

বরাদ্দ করা অর্থের জন্য অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিজেএমসিকে একটি ঋণচুক্তি সম্পাদন করতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।

পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিজেএমসির বন্ধ মিলগুলো ভাড়াভিত্তিক পদ্ধতিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চালুর কার্যক্রম চলমান আছে।

এগুলো আবার চালু হলে এসব মিলের পুরনো শ্রমিকরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবেন। একই সঙ্গে কর্মক্ষম ও দক্ষ শ্রমিকদের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন