দুই মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে এলএনজি

মহামারীর অচলাবস্থার মধ্যে দুই মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ দাম দিয়ে খোলা বাজার থেকে এলএনজি কিনতে হচ্ছে সরকারকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2021, 11:37 AM
Updated : 26 June 2021, 11:37 AM

বিশ্ববাজারে আকস্মিকভাবে দাম বাড়তে শুরু করায় দেশীয় চাহিদা পূরণে এভাবে এলএনজি কিনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জালানি সচিব আনিসুর রহমান।

শনিবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জির কাছ থেকে ১৭তম চালানে ৪৪৮ কোটি ১৬ লাখ ৮২ হাজার টাকায় ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এ চালানের ইউনিট মূল্য দাঁড়াচ্ছে ১৩ দশমিক ৪২ ডলার।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান।

গত এপ্রিলের শুরুতে সুইজারল্যান্ডের এওটি ট্রেডিংয়ের কাছ থেকে একই পরিমাণ এলএনজি কিনতে খরচ হয়েছিল ২৪৩ কোটি ৩০ লাখ ৩২ হাজার ৩৫৮ টাকা। সেই হিসাবে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে এই জ্বালানির দাম প্রায় দ্বিগুণ হল।

জ্বালানি সচিব আনিসুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সর্বশেষ ১৭তম চালানে আসা এলএনজির দাম এযাবতকালের সর্বোচ্চ হবে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৭৫ ডলারের বেশি হয়ে গেছে, যা চলতি মাসের শুরুতে ৭০ ডলারের কম ছিল।

“দাম যে হারে বাড়ছে আমরা খুবই শঙ্কিত। দামের পূর্বাভাসে ভবিষ্যতে ১১০ ডলার উঠে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উৎপাদনকারীরা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে, তারা দাম বাড়িয়ে দিতে চাচ্ছে।”

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে কয়েকটি পুরোনো প্রকল্পের ভেরিয়েশনসহ মোট ১৬টি প্রস্তাব পাস হয়েছে।

অন্যান্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- সরাসারি ক্রয় পদ্ধতিতে ৯৬ কোটি ৯৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের কাছ থেকে ৭টি বোলার্ড পুল টাগবোট ক্রয়।

সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টসর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম বা সেসিপ প্রকল্পের আওতায় ১৭ কোটি ৪২ লাখ ৩৯ হাজার ২২৪ টাকায় নাহিদ অ্যাডভার্টাইজিং অ্যান্ড প্রিন্টিংয়ের কাছ থেকে শিক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়।

বৈঠকে এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন।

এছাড়া গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধীনে ঢাকার আজিমপুরে সরকারি কলোনিতে ছয়টি বহুতল ভবন নির্মাণের ছয়টি পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০ তলা এসব ভবনে থাকবে ১৫০০ বর্গফুটের ১৫২টি ফ্ল্যাট থাকবে।

এসব ভবনের মধ্যে ১৪৩ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার ৩৪৪ টাকায় বঙ্গবিল্ডার্স একটি, ১৪৬ কোটি ৯৮ লাখ ১৯ হাজার ১৭২ টাকায় আরেকটি ভবন, ১৬৭ কোটি ৯৭ লাখ ৩৭ হাজার ১৮৯ টাকায় নুরানি কনস্ট্রাকশন একটি এবং ১৬৫ কোটি ৪১ লাখ ২৪ হাজার ৭৯৯ টাকায় কনস্ট্রাকশন আরেকটি ভবন নির্মাণ করবে।

এছাড়া ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন ১৬২ কোটি ৯৩ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬৬ টাকায় এবং ১৫৬ কোটি ৮৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৬ টাকায় দুইটি ভবন নির্মাণ করবে।

বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের চারটি ভ্যারিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন।

রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম

এদিকে রাশিয়ার সরকারি ও বেসরকারি সরবরাহকারীদের কাছ থেকে দ্রুত পাঁচ লাখ টন গম আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বেসরকারি পর্যায় থেকে দ্রুত গম আনতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিনের মধ্যে দরপত্র দাখিলের নিয়ম অনুমোদন করা হয় বৈঠকে।

এর ফলে অচিরেই রাশিয়া থেকে সরকারি পর্যায়ে দুই লাখ টন গম এবং বেসরকারি পর্যায়ে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে তিন লাখ টন গম আমদানি করা হবে।