বাজেটে সিম কর প্রত্যাহার হবে এখনও আশায় অ্যামটব

আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সিমের ওপর আরোপিত ২০০ টাকার কর প্রত্যাহারসহ কোনো সুপারিশই মূল্যায়ন করা হয়নি বলে জানিয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটব।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2021, 01:33 PM
Updated : 8 June 2021, 01:33 PM

মঙ্গলবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে টেলিযোগাযোগ খাতের সুপারিশগুলো পুর্নবিবেচনার আহ্বান জানায়।

প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো আশার প্রতিফলন হয়নি জানিয়ে অ্যামটব মহাসচিব এস এম ফরহাদ বলেন, “মোবাইল ফোনের সিমের কর বিলুপ্ত এবং মুনাফা না হলেও এই খাতে ২ শতাংশ হারে যে টার্নওভার কর ধরা আছে তাও প্রত্যাহারের প্রস্তাব রাখা হয়েছিল।”

তিনি জানান, মোবাইল অপারেটরদের পক্ষ থেকে দেওয়া অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্রস্তাব ছিল উচ্চ করপোরেট করের হারকে যৌক্তিক এবং সহনীয় পর্যায়ে কমিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত (বর্তমান ৪০%) ও তালিকাভুক্ত নয় (বর্তমান ৪৫%) এমন অপারেটরদের কর যথাক্রমে ২৫% ও ৩২% এ নামিয়ে আনা।

সরাসরি অপারেটর বিলিং থেকে পরিপূরক শুল্ক ও সারচার্জ প্রত্যাহার এবং সব ‘ইনট্যাঞ্জিবল’ সম্পদের উপর ‘এমোরটাইজেশন’ সুবিধা দেওয়া।

প্রতি ১০০ টাকা টক টাইমের ওপর এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের উপর ৩৩.২৫% ও ২১.৭৫% ভ্যাট, এসডি ও সারচার্জ যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার সুপারিশ করেছিল অ্যামটব।

এছাড়া সরকারি সংস্থাগুলোর জন্য ভ্যাট ছাড় সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া এবং অপরিশোধিত ভ্যাটের উপর আরোপিত সুদ যৌক্তিক করার কথা বলেছিল সংগঠনটি।

গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এস এম ফরহাদ বলেন, “২০১৯ সালে মোবাইল বাজারের রাজস্ব ছিল দেশের জিডিপির ১ দশমিক ১ শতাংশ এবং খাতটির কর ও ফির পরিমাণ ছিল মোট সরকারি কর রাজস্বের প্রায় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। তার মানে অর্থনীতিতে মোবাইল খাত সংশ্লিষ্ট করের অবদান এর আকারের ৪ দশমিক ২ গুণ।”

“মোবাইল কাভারেজের বিস্তৃতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক (একক গ্রাহক হার ৪৬ শতাংশ) এখনো মোবাইল নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হতে পারেননি। তাই ডিজিটাল অন্তর্ভূক্তির অন্যতম শর্ত হচ্ছে মোবাইল খাতে কর কাঠামোর সংস্কার।”

রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন “সরকার এ খাত থেকে বছরে ১৬ হাজার কোটি টাকার মত রাজস্ব পেয়ে থাকে, অপারেটরদের প্রস্তাবগুলো আমলে নিলে আনুমানিক এক হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব পেত।”

তিনি বলেন, “আমাদের দাবিগুলো সামগ্রিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে উত্থাপন করা সত্ত্বেও একটি শিল্প হিসেবে প্রতি বাজেটেই আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। সরকারকে অনুরোধ করবো এই খাতের কর কাঠামো নিয়ে একটি বিশদ গবেষণা পরিচালনা করার।

“এতে পারস্পরিক ও আন্তরিক আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সহজ হবে। এর ফলে দেশের ডিজিটাল সম্ভাবনা আরো বিকশিত হবে।”

গ্রামীণফোনের ডিরেক্টর ও হেড অব পাবলিক অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, “আমাদের বিশ্বাস, কর ব্যবস্থাকে যৌক্তিক পর্যায়ে ঢেলে সাজালে ডিজিটাল যাত্রা আরো গতিশীল হবে এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে আমাদের অবদান আরো সমৃদ্ধ হবে।”

বাংলালিংক এর চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, “আমরা এখনও আশাবাদী যে, কর্তৃপক্ষ এমন একটি কাঠামো তৈরি করবে, যা গ্রাহকদের সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নত ডিজিটাল সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।”