তিস্তা সেচ এলাকায় দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

নীলফামারী, দিনাজপুর ও রংপুরের তিস্তা সেচ এলাকা জুড়ে সেচের পানি নিশ্চিত করতে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2021, 01:12 PM
Updated : 4 May 2021, 01:27 PM

মঙ্গলবার ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ’ শীর্ষক এই প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

বৈঠক পরবর্তী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তিস্তা সেচ প্রকল্প এলাকা থেকে প্রতিবছর এক লাখ টন করে ধান উৎপাদন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪৫২ কোটি টাকা এবং এ বছরের জুনে শুরু করে তিন বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান।

প্রকল্পটির প্রস্তাবে বলা হয়, প্রকল্প এলাকার এক লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেচের পানি সরবরাহের মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা ২৩১ শতাংশ থেকে ২৬৮ পর্যন্ত বাড়ানোর উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

ফসলের নিবিড়তা বলতে একটি নির্দিষ্ট জমিতে এক বছরে কয়টি ফসল উৎপাদন করাকে বোঝায়।

ছবি: পিআইডি

একই সঙ্গে ওই এলাকায় পরিবেশ ও ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরের উন্নতি, জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা, কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি করার কথাও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও জানানো হয়, প্রকল্পটির আওতায় ৭৬৬ কিলোমিটার সেচ খালের ‘ডাইক’ শক্তিশালী করা হবে। ৭২ কিলোমিটার সেচ পাইপ স্থাপন করা হবে। স্লোপ প্রোটেকশন দেওয়া হবে ১০ দশমিক ০৮ কিলোমিটার।

বাইপাস সেচ খাল নির্মাণ করা হবে ৭ দশমিক ১৩ কিলোমিটার। ২৭টি কালভার্ট নির্মাণ, জলাধার পুন:খনন ২৭০ হেক্টর এবং সাড়ে নয় কিলোমিটারের চ্যানেল পুন:খনন করা হবে।

এছাড়াও ৫২ কিলোমিটার পরিদর্শন রাস্তা মেরামত, ২০টি রেগুলেটর নির্মাণ ছাড়াও ৮৭ হাজারের বেশি গাছ রোপন করা হবে।

এই প্রকল্পসহ মঙ্গলবারের একনেক সভায় মোট ১১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা ব্যয়ের ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান।

এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৮ হাজার ৯৯১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, প্রকল্প সহায়তা থেকে প্রায় ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৮১০ কোটি টাকার যোগান দেওয়া হবে।

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে-

>> ‘অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন (প্রথম পর্যায়)’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫ কোটি ১২ লাখ টাকা।

>> ‘সাইনবোর্ড-মোড়লগঞ্জ-রায়েন্দা -শরণখোলা-বগী সড়কের (আর-৭৭৩) ১৭তম কিলোমিটারে পানগুচি নদীর ওপর পানগুচি সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। 

>> ‘উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৬৪৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

>> ‘গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের বহুতল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২৪ কোটি টাকা।

>> ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প। এতে ব্যয় বাড়ছে ১৯৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

>> ‘রাঙ্গামাটি জেলার কারিগর পাড়া থেকে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও ব্রিজ বা কালভার্ট নির্মাণ’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

>> ‘কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও চাঁদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে আড়াই হাজার কোটি টাকা।

>> ‘চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৫৮ কোটি টাকা

>> ‘বাপবিবোর বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকা।