ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ কমাতে পারে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি: এডিবি

মহামারীর প্রথম ধাক্কা সামাল দিতে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির গতি সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে কিছুটা শ্লথ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2021, 06:24 AM
Updated : 28 April 2021, 09:52 AM

বুধবার এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্টে বলা হয়েছিল, সরকারের দেওয়া প্রণোদনার সুফল মেলার পাশাপাশি বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৬.৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি পেতে পারে। 

তবে হালনাগাদ তথ্যের কথা জানিয়ে বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাশ পরে এক বিবৃতিতে বলেন, রেমিট্যান্স, রপ্তানি ও অন্যান্য সূচকে বাংলাদেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর ইংগিত থাকলেও মহামারী পরিস্থিতির সাম্প্রতিক অবনতি এবং লকডাউনের বিধিনিষেধের কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ ৬.৮ শতাংশ থেকে অন্তত এক শতাংশ পয়েন্ট কম হতে পারে।”    

তিনি বলেন, প্রণোদনামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং নীতি সুফল দেওয়ায় ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর প্রথম ধাক্কা বাংলাদেশ সরকার ভালোভাবেই সামাল দিতে পেরেছে।

“চলমান এই মহামারী সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার, বেসরকারি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যবসা করার ব্যয় কমিয়ে আনা, রপ্তানি বহুমুখী করা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে আরও কাজ করার সুযোগ এনে দিয়েছে।”

চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার ৮.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও মহামারীর বাস্তবতায় পরে তা ৭.৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।

মহামারীর ধাক্কায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসে, যা আগের অর্থবছরে ৮ দশমিক ২ শতাংশ ছিল।

এডিবি বলছে, বিশ্ব অর্থনীতির টেকসই পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি বাংলাদেশের রপ্তানি ও আমদানির গতি, প্রণোদনার বাস্তবায়ন এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপরই প্রবৃদ্ধির বিষয়টি নির্ভর করবে।

বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও ধীরে ধীরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী ধারায় ফিরবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অঞ্চল হিসাবে এ বছর দক্ষিণ এশিয়ার পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া হবে সবচেয়ে দ্রুত। ২০২০ সালে যেখানে এ অঞ্চলের অর্থনীতি ৬ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছিল, এবার তা ৯.৫ শতাংশ হারে বাড়বে।

এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দেশ ভারত যদিও মহামারীতে নাজুক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তারপরও এ বছর সেখানে ১১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে এডিবি। গতবছর ভারতের অর্থনীতি ৮ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছিল।   

এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়াসুকি সোয়াদা বলেন, ভারত যে গতিতে টিকাদান চালিয়ে নিচ্ছে, তাতে অগাস্টের মধ্যে সেখানে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে ২০২২ সালেই হয়ত ভারত ‘হার্ড ইমিউনিটিতে’ পৌঁছে যাবে। 

এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঘুরে দাঁড়ানোর গতি যতটা হবে বলে আগে ভাবা হয়েছিল, এ বছর তার চেয়ে বেশি হবে বলেই এডিবির ধারণা। 

তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে বাড়লে এবং টিকাদানের গতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বাড়ানো না গেলে অঞ্চলিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি বাড়ানো যে কঠিন হবে, সে কথাও এডিবি মনে করিয়ে দিয়েছে।