কাগজের কর প্রত্যাহার চান সম্পাদকরা

সংবাদপত্র ছাপানোর প্রধান কাঁচামাল নিউজ প্রিন্ট কাগজের ওপর কর প্রত্যাহার চেয়েছেন সম্পাদকরা। একই সঙ্গে তারা সংবাদপত্র শিল্পে করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাব বিবেচনার আহবান জানিয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2021, 11:13 AM
Updated : 15 April 2021, 11:13 AM

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ. হ. ম. মুস্তফা কামালের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে এসব প্রস্তাব দেন বিভিন্ন সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদকরা।

অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, বৈঠকে দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন, আমাদের নতুন সময় পত্রিকার সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান ও চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শাইখ সিরাজ সংযুক্ত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম সংযুক্ত ছিলেন।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সম্পাদকরা ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। পাশাপাশি সামগ্রিক অর্থনীতি নিয়েও বিভিন্ন প্রস্তাব ও পরামর্শ দিয়েছেন। তারা নিউজ প্রিন্ট কাগজের ওপর কর প্রত্যাহার করা যায় কিনা, সে বিষয়েও প্রস্তাব দিয়েছেন।

বৈঠকের আলোচনার বিষয় সম্পর্কে মুস্তফা কামাল বলেন, “খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষিতে ভর্তুকি আরও বাড়াতে বলেছেন চ্যানেল আই এর শাইখ সিরাজ। পোল্ট্রি শিল্পের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এবং পরামর্শ দিয়েছেন।

এছাড়া কৃষিতে কাজ করতে আসা শিক্ষিত তরুণদের আগ্রহী করে তুলতে প্রণোদনা চালুর প্রস্তাব করেছেন তিনি। শহর কেন্দ্রিক ছাদকৃষিতেও প্রণোদনার কথাও বলেছেন।

“নিউজ প্রিন্ট পেপারের ওপর কর কমিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছেন নঈম নিজাম। নাঈমুল ইসলাম খান সংবাদপত্র শিল্পে করপোরেট ট্যাক্স কমাতে বলার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানোন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন।“

উন্নয়ন প্রকল্পে যেসব অপচয় হয় তা বন্ধ করতে আরও সচেষ্ট হতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছেন কয়েকজন সম্পাদক, বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এক প্রশ্নের উত্তরে ভবিষ্যতে খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “যেখানে হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন সরকার সেখানে হাতে দেবে, সহযোগিতা করবে। কৃষি আমাদের লাইফ লাইন। সব প্রকার কৃষিপণ্য উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। শিক্ষিত যারা কৃষিতে আসতে চায়, তাদেরকে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে। ম্যানুয়াল থেকে যারা আধুনিক কৃষিতে আসতে চায় তাদেরকে সহযোগিতা করবো। কৃষিকে শক্তিশালী করার জন্য যা যা প্রয়োজন সরকার সব করবে।“

চালের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ধান-চাল-গম এগুলো প্রকৃতির আচরণের ওপর নির্ভরশীল। আমরা দাবি করি আমরা স্বাবলম্বী। যে বছর প্রকৃতি স্বাভাবিক থাকে, সে বছর আমরা এই দাবি করতে পারি। প্রকৃতি বৈরি হয়ে উঠলে, প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ আসলে সেটা আমরা মেইনটেন করতে পারিনা। আমাদের এখানে যে পরিমাণ জমি আছে, দক্ষতা আছে, সেটা যদি পূর্ণাঙ্গ মাত্রায় ব্যবহার করতে পারি, তবেই আমরা সেবছর সাবলম্বী। কিন্তু গত বছর আমাদের অনেক বোরো ধান নষ্ট হয়েছে। সেই কারণে যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের জন্য একটা প্যাকেজ নেওয়া হচ্ছে।“

ভারত, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড সব দেশেই ঘাটতি আছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে সারা বিশ্বেই কৃষক কৃষিকাজ করতে পারে নাই। সাপ্লাইটা কমে গেছে। এ কারণেই দামটা বেশি।