পায়রায় বাড়ল ব্যয়, পুরো পরিকল্পনা দেখতে চান প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় ‘পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ’ প্রকল্পের সামগ্রিক কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2021, 12:44 PM
Updated : 16 Feb 2021, 12:44 PM

মঙ্গলবার একনেক প্রকল্পটির সংশোধনী অনুমোদন দেওয়ার সময় প্রকল্পটির সার্বিক অবস্থা দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

মন্ত্রী বলেন, “পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্পটির সংশোধনী অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী পরবর্তী একনেক সভায় প্রকল্পটির টোটাল ওয়ার্কপ্ল্যান নিয়ে আসার জন্য বলেছেন।

“পায়রা বন্দরের টোটাল ওয়ার্ক প্ল্যান, সামগ্রিক কর্মপরিকল্পনা আগামী একনেক সভায় আনতে হবে। পায়রা কর্তৃপক্ষ বরাবর এই নির্দেশনা তিনি দিয়েছেন।”

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “প্রকল্পটি তো একবছর আগে অনুমোদন পেয়েছে। তাহলে আবার একবছর পরে কেন সংশোধন করা হল, কেন ব্যয় ও সময় বাড়ছে, এর কি সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি ভালোভাবে? এসব বিষয় দেখা হতে পারে।”

প্রকল্পটি ২০১৯ সালে তিন হাজার ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু দুই বছর বাস্তবায়নের পর প্রকল্পটি অগ্রগতি মাত্র ৭ শতাংশ।

এমন পরিস্থিতিতে প্রকল্পটির আগের নকশা পরিবর্তন করে ৫৩৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় বাড়িয়ে মঙ্গলবার একনেক এর সংশোধন অনুমোদন দেয়। বাড়ানোর পর প্রকল্পটিতে এখন ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ৫১৬ কোটি টাকা হয়েছে।

প্রকল্প ব্যয় বাড়ার কারণ ব্যাখ্যায় পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মো. মামুন-আল রশীদ বলেন, “পায়রা বন্দরে যখন ৪০ হাজার টন বহনে সক্ষম জাহাজ এসে ভিড়বে তখন যে ঢেউ সৃষ্টি হবে তা আরসিসি পাইপ সহ্য করতে পারবে না। তাই নতুন নকশায় স্টিলের পাইপের নকশা দেওয়া হয়েছে। এই কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে।

“এছাড়া নদীর ওপরে যে সেতু ছিল সেটার দৈর্ঘ্য বাড়াতে হয়েছে। এতে পাইলের সংখ্যাও বেড়েছে। এতেও প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বেড়েছে।”

প্রকল্পটি অনুমোদনের আগে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছিল কীনা- এ প্রশ্নে পরিকল্পনা কমিশনের এই সদস্য বলেন, “তখন এতো ডিটেইলস ফিজিবিলিটি তখন হয়নি। বাস্তবে কাজ করতে গিয়ে এসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।”

তিনি বলেন, “এরকম বড় বন্দর করার মতো আমাদের নিজস্ব এক্সপার্ট থাকার প্রশ্নই আসে না। শুরুতে করা হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীতে যখন বেলজিয়াম ও ডেনিশের দুটি ফার্ম দিয়ে করা হয়, তারা দেখল যে ৪০ হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ যখন এখানে এসে ভীড়বে, যে ঢেউ সৃষ্টি হবে তাতে করে আরসিসি পাইপ টলারেট করতে পারবে না। সে কারণে বলা হয়েছে যে, স্টিল পাইপ দিয়ে করার জন্য। এ কারণে একটা খরচ বেড়েছে।”

দুই বছরে প্রকল্পের মাত্র সাত শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে জানিয়ে এই সদস্য বলেন, “এটাও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এখন ডিজাইন হয়ে গেছে খুব অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে, বাকী সময়ের মধ্যে প্রকল্প শেষ করা সম্ভব হবে।”