‘সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়’ কর ব্যবস্থাপনা চান অর্থমন্ত্রী

করের আওতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণভাবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে (ডিজিটাল) আনার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2021, 02:24 PM
Updated : 11 Feb 2021, 02:24 PM

দেশের কর জিডিপির অনুপাত ১৫ থেকে ১৭ শতাংশে উন্নীত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও জাতীয় রাজস্ব বার্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরের) সম্মেলন কক্ষে সেরা করদাতাদের ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “করের হার বাড়ানোর জন্য এনবিআরকে ডিজিটাল ব্যবস্থায় যেতে হবে। তা হলে করের খাত আরও বেড়ে যাবে। নতুন নতুন খাত বের হয়ে আসবে।

দেরি না করে কর ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল করার নির্দেশ দিয়ে এনবিআরকে এ বিষয়ে ‘দায়িত্ব নিয়ে’ কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। 

দেশে প্রত্যক্ষ কর বৃদ্ধি পাওয়ার তথ্য অনুষ্ঠানে তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এ কর আরও বাড়াতে হবে।… রেট না কমালে করের আওতায় বাড়বে না। মোট কথা খাত বৃদ্ধি করতে হবে। সেটা করতে পারলে আমারা লক্ষ্য পৌঁছতে পারব।”

প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় কর-জিডিপি অনুপাতে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার বিষয়টি সামনে এনে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কর জিডিপির অনুপাত অন্তত ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ হওয়া উচিত।”

তার ভাষ্য, “আগে কর নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক ভয়ভীতি ছিল। সেই ভীতি এখন অনেকটাই দূর হয়েছে। এখন কর আহরণ সিস্টেম উন্নত করা দরকার। এটা করতে পারলে জনগণ করের আওতায় চলে আসবে।”

দেশের মানুষ কর দিতে চাইলেও রাজস্ব বিভাগ তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না বলে মন্তব্য করেন মুস্তফা কামাল।

দেশের ‘সামর্থ্যবান’ সবাইকে কর দেওয়ার আহবান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “নিজে কর দেবেন, অন্যকে কর প্রদানে উৎসাহিত করবেন।”

তিনি বলেন, যোগাযোগসহ অবকঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে ‘উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যেতে অনেকগুলো মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। আরো মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সরকার এত বড় বড় প্রকল্প নেওয়ার সাহস পাচ্ছে করদাতাদের কাছ থেকে।

“তাই করের আওতায় বৃদ্ধি করতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে,” বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে ২০১৯-২০ অর্থবছরের কর দাতাদের মধ্যে ৩৬টি ক্যাটাগরিতে ঢাকাসহ সারাদেশের মোট ৬৬৫ জনকে ‘সেরা করদাতা’ হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়।

এর মধ্যে ১৪১ জনকে ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হয়। ব্যক্তি পর্যায়ে ৭৬ জন, ৫৩ কোম্পানি এবং অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ১২ জন ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন ।

কোম্পানি ও ব্যক্তি পর্যায়ের মোট ১০ জন এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সম্মাননা স্মারক ও ট্যাক্স কার্ড নেন।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে গ্রামীণফোন, আকিজ গ্রুপ, বাংলাদেশ আমেরিকান টোবাকো, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক ও ইউনিলিভার লিমটেডের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে ট্যাক্স কার্ড নেন। 

আর ব্যক্তি পর্যায়ে স্মারক ও ট্যাক্স কার্ড পেয়েছেন সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, রুবাইয়া ফারজানা হোসেন, হোসনে আরা হোসেন, লাইলা হোসেন ও হাজী মো. কাউস মিয়া। বাকি ১৩১টি ট্যাক্স কার্ডের প্রাপকরা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

কোভিড-১৯ এ মারা যাওয়া এনবিআরের ৮ কর্মকর্তার পরিবারের হাতে অনুষ্ঠানে ‘সমবেদনা স্মারক’ তুলে দেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।