আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে শেষ মুহূর্তে মন বদলে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় এক মাস বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2020, 09:54 AM
Updated : 30 Nov 2020, 12:21 PM

বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম জানিয়েছেন, যে করদাতারা এখনও আয়কর রিটার্ন জমা দেননি, তারা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জমা দিতে পারবেন।

আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর সোমবারই ছিল রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন। এনবিআর চেয়ারম্যান আগের দিনও বলেছিলেন, সময় আর বাড়বে না।

তবে সোমবার দুপুরের পর এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সামনে এসে তিনি সময় বাড়ানোর ঘোষণা দেন।  

আবু হেনা বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এনবিআরের ক্ষমতা প্রয়োগ করে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতাদের সুবিধার্থে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সময় এক মাস বৃদ্ধি করা হল।”

তিনি জানান, দেশে ৫০ লাখ ৭২ হাজার নাগরিকের কর শনাক্তকারী নম্বর (টিআইএন) রয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত তাদের মধ্যে ১৫ লাখ করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছেন।

“এখনও কর অঞ্চলগুলোতে ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পাশাপাশি কোভিড পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় রেখে আমরা এক মাস বৃদ্ধি করলাম।”

অন্যবছর নাগরিকদের কর দিতে উৎসাহিত করতে কর মেলার আয়োজন করা হলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবার সে আয়োজন হয়নি।

শীতের আগে আগে ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় এবং দেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রিটার্ন জমার সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়ে এনবিআরে চিঠি দিয়েছিল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, আয়কর আইনজীবীসহ পেশাজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন।

এই প্রেক্ষাপটে রিটার্ন জমার সময় বাড়ানো হতে পারে বলে শনিবার ইংগিত এসেছিল এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তারা কথায়। তার ভিত্তিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমসহ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছিল।

প্রতিবছর ৩০ নভেম্বরই বিনা জরিমানায় আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন থাকে। আয়কর অধ্যাদেশের নিয়ম অনুযায়ী, কেউ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দিতে না পারলে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে দুই থেকে চার মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে নিতে পারেন। সেজন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হয়।

তখন একজন কর কর্মকর্তা আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী জরিমানা, করের ওপর ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সরল সুদ কিংবা করের টাকার উপর মাসিক ২ শতাংশ হারে বিলম্ব সুদ আরোপ করতে পারেন।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পাশের আগে করোনাভাইরাস মহামারী বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। সেই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এনবিআর চাইলে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের যে কোনো জরিমানা ও সুদ মওকুফ করে দিতে পারবে।

বাজেট অধিবেশনে এনবিআরের এই ক্ষমতাকে আয়কর অধ্যাদেশের ১৮৪(জি) ধারা হিসেবে যুক্ত করা হয়। ফলে নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন না দিলে এনবিআর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জরিমানা ও সুদও মওকুফ করতে পারে।