১৬ হাজার কোটি টাকার আটটি ক্রয় প্রস্তাবে সায়

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ১৬ হাজার ২৭১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার আটটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।

এই ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৫ হাজার ৬২৮ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং অভ্যন্তরীণ দেশিয় ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ হিসেবে ৬৪৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা যোগান দেওয়া হবে।

এই বিপুল ব্যয় দিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি ও কৃষি মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি করে প্রকল্পের ক্রয় কার্যক্রম চলবে।

বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেন।

ড. সালেহ বলেন, “বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে সৌদি বেসিক ইন্ডাষ্ট্রিজ করপোরেশন (এসএবিআইসি), সৌদি আরব থেকে পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম লটে সমান ২৫ হাজার টনকরে বাল্ক প্রিল্ড ইউরিয়া সার আমদানির একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ১৬৮ কোটি ২০ লাখ ১০ হাজার টাকা।

এছাড়া বিসিআইসি কর্তৃক আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের আরিস ফার্টিলাইজারস গ্রুপ পিটিই লিমিটেডের (স্থানীয় এজেন্ট পোটন ট্রেডার্স, ঢাকা) কাছ থেকে প্রথম লটে ২৫ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ৮৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।

সভায় বিসিআইসি কর্তৃক আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে সুইস সিঙ্গাপুর ওভারসিজ এন্টারপ্রাইজ পিটিই লিমিটেড থেকে প্রথম লটে ২৫ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান ড. আবু সালেহ। এতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ৮৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, বিএডিসি ও রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশন ‘প্রদিনটর্গ’ এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য এক লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার আমদানির আরেকটি ক্রয় প্রস্তাব সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩৪১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

সভায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) কর্তৃক ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৪২.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প স্থাপনে চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের (সিএমইসি) সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদে চুক্তি স্বাক্ষরের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ২৫ বছরে ওই কোম্পানিকে ১৫ হাজার ৩২৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

এছাড়া সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন খুলনা জোনের খুলনা সড়ক বিভাগের আওতাধীন ‘দিঘুলিয়া (রেলিগেট)-আড়ুয়া-গাজীরহাট-তেরখাদা সড়কের প্রথম কিলোমিটারে ভৈরব নদীর উপর ভৈরব সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের ব্রিজ নির্মাণসহ পূর্তকাজের জান্য সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ওয়াহিদা কন্সট্রাকশন লিমিটেড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩০২ কোটি ৭৮ লাখ।

এর আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক দেশের ছয় জেলায় (ফরিদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলা, নওগাঁ, সিলেট) ছয়টি রাইস মিল স্থাপন সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্রকল্পটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে বাস্তবায়ন হবে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল।