রিটার্ন জমার সময় বাড়ছে না: এনবিআর

করোনাভাইরাস মহামারীকালেও আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হচ্ছে না বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2020, 04:05 PM
Updated : 12 Nov 2020, 04:11 PM

বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “এই সময় বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।”

আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। এবার মহামারীর কারণে সেই সময় বাড়ানো হবে কি না- সাংবাদিকরা সেই প্রশ্ন করেন এনবিআর চেয়ারম্যানকে।

সময় না বাড়ালেও কোনো ব্যক্তি বিধি অনুযায়ী আবেদন করে আগের মতোই সময় নিতে পারবেন বলে জানান তিনি।

“যে সব করদাতা এই সময়ের মধ্যে সময় বাড়ানোর আবেদন করবেন, তারা পরেও রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। আর সে সুযোগও দেওয়া হবে আয়কর অধ্যাদেশের বিধান মোতাবেক।”

২০০৮ সাল থেকে জাতীয় আয়কর দিবস এবং ২০১০ সাল থেকে আয়কর মেলার আয়োজন করে আসছে এনবিআর। করোনাভাইরাসের কারণে এবার আয়কর মেলা হচ্ছে না।

রহমাতুল মুনিম বলেন, “করদাতাদের সুবিধার জন্য প্রতিটি কর অঞ্চলে কর মেলার পরিবেশে রিটার্ন গ্রহণ, কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) প্রদান, কর তথ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। রিটার্ন দাখিলের পর করদাতাদের তাৎক্ষণিকভাবে প্রাপ্তি স্বীকারপত্রও দেওয়া হচ্ছে।”

সেগুনবাগিচায় এনবিআর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রাজস্ব আদায়ের সর্বশেষ পরিস্থিতিও তুলে ধরেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভ্যাটের ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইসের (ইএফডি) পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফল হয়েছে। আগামী মাসে আরও এক হাজার ইএফডি বসানো হবে। পর্যায়ক্রমে আরও ১০ হাজার ইএফডি বসানো হবে।

ফেইসবুক, গুগলের মতো বৈশ্বিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে রাজস্ব আদায়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা পালন সম্পর্কেও এনবিআর প্রধানকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।

তিনি বলেন, “রায় এখনও হাতে আসেনি। এই খাত থেকে রাজস্ব আদায়ে অসুবিধা হলো, শুধু ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানো অর্থ থেকেই আমরা রাজস্ব পাই। হুন্ডির মতো অন্যান্য মাধ্যমে অর্থ পাঠানো হলে তা থেকে রাজস্ব পাওয়া যায় না।

“এসব নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও প্রযুক্তি, বাণিজ্য এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে।”

চার মাসে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ১.১৪%

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ৬৬ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি।

এই চার মাসে আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৮৭ হাজার ১ কোটি টাকা। এ হিসাবে জুলাই-অক্টোবর সময়ে লক্ষ্যের চেয়ে ২০ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কম হয়েছে।

পুরো অর্থবছরে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য ধরা আছে।

গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের এই চার মাসে ৬৫ হাজার ৮০৮ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে।

রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতি প্রসঙ্গে রহমাতুল মুনিম বলেন, “ঘাটতি থাকলেও গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭৪৭ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এই মহামারীকালে প্রবৃদ্ধি থাকাটাও একটা বড় বিষয়।”

অর্থবছরের বাকি মাসগুলোতে রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে আশার কথা শোনান তিনি।