বৃহস্পতিবার রেলভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এই তথ্য জানিয়েছেন।
যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের কাজ এই বছর শুরু করে ২০২৪ সালে শেষ করতে চায় সরকার।
জাপানের সহায়তায় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই রেলসেতু নির্মাণ হচ্ছে।
রেলমন্ত্রী বলেন, ২০২৪ সালের অগাস্টের মধ্যে কাজ শেষ হবে এবং নতুন সেতুর উপর দিয়ে ট্রেন চলবে।
বর্তমানে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুতে রেললাইন থাকলেও তা সিঙ্গেল লাইন, গতির উপরও আছে বিধিনিষেধ।
রেলমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন তারিখে বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেলসংযোগ চালু হয়, যা স্বাধীনতার পর রেলওয়ের উন্নয়নে প্রথম মাইলফলক।”
আলাদা রেল সেতুর প্রয়োজনীয়তা দেখিয়ে তিনি বলেন, সেতুটি সার্ক, বিমসটেক, সাসেক ও অন্যান্য আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক রেলওয়ে রুট এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের একটি অংশ।
“সেতুতে গতি নিয়ন্ত্রণাদেশসহ কিছু বিধি নিষেধের কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক/উপ-আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ রেলওয়ে বিদ্যমান চাহিদার সাথে তাল মিলাতে পারছে না। তাই অভ্যন্তরীণ, ক্রস-বর্ডার এবং ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে ট্রাফিক এর বর্ধিত চাহিদা বিবেচনায় রেখে নির্বিঘ্নে নিরবিচ্ছিন্ন ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করতে রেলওয়ের জন্য বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে পৃথক রেল সেতু নির্মাণ করার জন্য সরকার কর্তৃক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।”
বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকসহ প্রায় ৪.৮০ কিলোমিটার হবে এই সেতু। উভয় প্রান্তে মোট প্রায় ০.০৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, প্রায় ৭.৬৬৭ কিলোমিটার এপ্রোচ এমব্যাংমেন্ট এবং লুপ ও সাইডিংসহ মোট প্রায় ৩০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সুজন জানান, ১৫ নভেম্বর থেকে রেলপানি পুনরায় বিক্রি হবে।
“রেলপানির মান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন উঠলে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক বিএসটিআই, বুয়েট এবং আইসিডিডিআর,বি দ্বারা রেলপানি পরীক্ষা করানো হয়। তাদের রিপোর্ট মোতাবেক এ পানি পানের উপযুক্ত হিসেবে সনদপত্র প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং এই পানি বিক্রিতে আর কোনো সমস্যা হবে না।”
রেলওয়ে ক্যাটারিং সার্ভিস নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ক্যাটারিং সার্ভিস পরিচালনার বিষয়টি তদারকি, মান নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশের আলোকে ক্যাটারিং পরিচালনা করা হবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো শামসুজ্জামান ছাড়াও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।