ছোট ঋণ বিতরণের সময় আরেক দফা বাড়ল

মহামারীর ক্ষতি সামলে উঠতে সরকার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে,  সেখান থেকে ঋণ পাওয়ার সময় আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Nov 2020, 05:31 PM
Updated : 1 Nov 2020, 05:31 PM

এখন ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এই তহবিল থেকে ঋণ পাবেন ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। আগে এই ঋণের জন্য আবেদন করতে প্রথম দফায় অগাস্ট এবং পরে তা দুই মাস বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ব্যাংকগুলো আসলে এতোদিন বড় ঋণ বিতরণেই বেশি ব্যস্ত ছিল। সে কারণে ছোট ঋণের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে পারেনি। ব্যাংকগুলো কিছু বিষয়ে আবেদনও করেছিল। তাদের আবেদন অনুযায়ী ছোট ঋণের ঝুঁকির দায়িত্বও নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

“এছাড়া এ ঋণের নীতিমালার আরও কিছু শর্ত শিথিল করা হয়েছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ঋণ বিতরণের সময় বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি, এবার কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে।”

সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণের সময় আরেক দফা বাড়ানোর বিষয়টি রোববার এক সার্কুলারের মাধ্যমে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সেখানে বলা হয়েছে, সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ বিতরণের যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল, ‘ফলপ্রসূ’ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে অর্জন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কিছু ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান তা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।

“ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের উক্ত ব্যর্থতার ফলে সিএমএসএমই খাতে কাঙ্খিত উৎপাদন ও সেবা প্রসার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে কর্মবল বহালসহ সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

সে কারণে সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ২০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ সিএমএসএমই প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পুনঃনির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে সর্কুলারে।

এছাড়া এ বিষয়ে ৩ সেপ্টেম্বরের সার্কুলারের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে বলে নতুন সার্কুলারে জানানো হয়েছে।

এই প্যাকেজের ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ। এর মধ্যে অর্ধেক, অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫ শতাংশ পরিশোধ করবে ঋণ গ্রহিতা শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বাকি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেবে।

ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শেষ ফজলে ফাহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নানা অজুহাতে ব্যাংকগুলো ছোট ঋণ বিতরণে আগ্রহ দেখায় না। অথচ এই ঋণ খেলাপি হওয়ার নজির খুবই কম। তারপরও ব্যাংকগুলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে কেন ঋণ দিতে চায় না বুঝতে পারি না।

“সময় বাড়ানোর পর এ প্যাকেজের পুরো ঋণ আদায় হবে বলে আমি আশা করছি। তবে, এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব সময় কড়া নজরদারি করতে হবে।”

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চাহিদা বিবেচনায় ব্যাংকগুলো প্রথমে রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতার অর্থ নিয়ে ব্যস্ত ছিল। পরবর্তী সময়ে বড় শিল্পে ঋণ দেওয়া হয়েছে।

“এখন সিএমএসএমইসহ সব ধরনের ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। আশা করছি, নভেম্বরের মধ্যেই ছোট ঋণ বিতরণেও আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হবে।”