বুড়িগঙ্গা পুনরুদ্ধার কাজে ৫০ কোটি টাকায় ঠিকাদার নিয়োগ

বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের একটি প্যাকেজের আওতায় পূর্ত কাজের জন্য ৫০ কোটি ৬২ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩০ টাকায় ঠিকাদার নিয়োগে সায় দিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2020, 03:19 PM
Updated : 28 Oct 2020, 03:19 PM

বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত আবু সালেহ মোস্তফা কামাল এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার (নিউ ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ-বুড়িগঙ্গা রিভার সিস্টেম) (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্পের একটি প্যাকেজের পূর্ত কাজের জন্য ঠিকাদারী কোম্পানি এলএ ও টিটিএলএ যৌথভাবে এ কাজ পেয়েছে।

নদী খনন করে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে বুড়িগঙ্গাকে দুষণমূক্ত করা, বুড়িগঙ্গা-তুরাগ রুটকে সারা বছর নৌ-চলাচলের উপযোগী করাসহ সেচ ও মৎস্য উন্নয়নের জন্য ২০১০ সালে এ প্রকল্প নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ প্রকল্প তিন বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা থাকলেও পরিকল্পনায় ত্রুটির কারণে দুই দফা প্রকল্প সংশোধন করা হয়, মেয়াদ বাড়ানো হয় চার দফা।

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী জানান, এদিন সভায় অনুমোদনের জন্য মোট চারটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল।

এর মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের দুটি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি প্রস্তাব ছিল।

অনুমোদিত এই চার প্রস্তাব বাস্তবায়নে মোট ৪২৮ কোটি ৯৮ লাখ ৯৪ হাজার ২১২ টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে ১৭৬ কোটি ১৪ লাখ ৫৯ হাজার ২৮৫ টাকার যোগান দেবে সরকার। এছাড়া এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ঋণ হিসেবে ২৫২ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯২৭ টাকা দেবে বলে জানান মন্ত্রী।

অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল জানান, ঢাকা ওয়াসার অধীনে ‘ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় একটি প্যাকেজের কাজ সর্বনিম্ন দরদাতা জার্মানির লুডভিং ফিফার হোশান্ড তাইয়েফবাউ জিএমবিএইচকে দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।

এতে ব্যয় হবে ১৬৪ কোটি ৯ লাখ ৪ হাজার ৪১৯ টাকা। প্যাকেজের আওতায় দরদাতা প্রতিষ্ঠান মডস জোন-৭ এলাকায় মোট ১৬৩ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার পানির লাইন পুনঃস্থাপন করে সাতটি ডিস্ট্রিক্ট মিটার্ড এরিয়া (ডিএমএ) কমিশনিংসহ এক বছর পর্যন্ত নেটওয়ার্ক অপারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করবে।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, পল্লী এলাকার সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নেওয়া ‘রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’ বাস্তবায়নে পরামর্শক হিসেবে চারটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৮৮ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ৫০৮ টাকা।

এই চার কোম্পানি হল- ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্ট লিমিটেড (বাংলাদেশ), জিআইটিইসি-আইজিআইপি (জার্মানি), দেব কনসালটেন্ট লিমিটেড (বাংলাদেশ) এবং সিসোর্স প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্টস (প্রাইভেট) লিমিটেড (বাংলাদেশ)।

এছাড়া পালবাড়ী-দড়াটানা-মনিহার-মুড়ালী জাতীয় মহাসড়কের মনিহার থেকে মুড়ালী পর্যন্ত চার লেইনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের একটি প্যাকেজের পূর্ত কাজ যৌথভাবে সর্বনিম্ন দরদাতা দুটি কোম্পানিকে দেওয়া হচ্ছে।

আতাউর রহমান খান লিমিটেড এবং মাহবুব ব্রাদার্স লিমিটেড ১২৫ কোটি ৫২ লাখ ১২ হাজার ৯৫৫ টাকায় এই কাজ পেয়েছে বলে অতিরিক্ত সচিব জানান।

এই প্যাকেজের আওতায় সড়ক বাঁধ নির্মাণ, ফুটপাত নির্মাণ, ধীরে চলা যানবাহনের জন্য আলাদা লেইন নির্মাণ, বাস-বে, আরসিসি ড্রেইন কাম ফুটপাত, আরসিসি ক্রস ড্রেইন, নিউ জার্সি ব্যারিয়ার, সড়ক ডিভাইডার, সাইন, সিগন্যাল, গাইড পোস্ট, রোড মার্কিংয়ের কাজ হবে।

এদিন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অনুমোদনের জন্য একটি প্রস্তাব ছিল জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের (ইনার ও আউটার চ্যানেলে) জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং’ প্রকল্পটি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা অনুযায়ী ‘রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে’ বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডি নুলের মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) বাস্তবায়নের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।