নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্লট দিতে বললেন স্পিকার

মহামারীকালের সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নারী উদ্যোক্তাদের প্লট বরাদ্দ দিতে বললেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2020, 03:12 PM
Updated : 24 Oct 2020, 03:19 PM

শনিবার উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের উদ্যোগে ‘উইমেন ই-কমার্স অন্ট্রাপ্রেনিওরশিপ সামিট’র (উই সামিট) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্পিকার একথা বলেন। তিনি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন বলে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে স্পিকার বলেন, “বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কিছু গুরুতর চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা বাসায় অবস্থান করায় নারীদের পারিবারিক দায়িত্ব বেড়ে গেছে, অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতিতে মা হিসেবে নারীদের সহায়তা করতে হচ্ছে, নারী উদ্যোক্তাদের পূর্বে নিযুক্ত করা কর্মচারীদের বেতন ও গৃহীত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হচ্ছে।

“এ সকল সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য তাদের প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা, ব্যাংকিং সহায়তা, সুদমুক্ত ঋণ সহায়তা, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত বিনা সুদে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ সহায়তা, যথাযথ আইন ও নীতি প্রণয়ন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বাস্তবায়িত ১০০টি অর্থনৈতিক জোনে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ প্লট বরাদ্দ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।”

স্পিকার বলেন, “ই-কমার্সে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে অনলাইন পেমেন্ট, কর ও শুল্ক অবকাঠামো উপযোগী করতে হবে। প্রযুক্তিভিত্তিক মডেলগুলোকে উন্নত করার মাধ্যমে ই-কমার্স সেক্টরকে আরও সমৃদ্ধ করতে হবে যেন নারী উদ্যোক্তারা এর সুফল আরও বহু গুণে পেতে পারে। নারী উদ্যোক্তাদের অনেক জটিল ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়, যা কাম্য নয়।”

নারী উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, অপর্যাপ্ত মূলধন, লিঙ্গ বৈষম্য, জ্ঞান ও পরিচালন দক্ষতার অভাব, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সহায়তার অভাব, তথ্য প্রাপ্তি ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধায় সীমিত প্রবেশাধিকার ইত্যাদি সমস্যা রয়েছে। ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনেক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হবার কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীদের নিজস্ব সামান্য সঞ্চয় থেকে বিনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু নারীরা এ সকল চ্যালেঞ্জকে সম্ভাবনায় পরিণত করে  অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এবং নিজেদের প্রচেষ্টায় নারী উদ্যোক্তা হিসেবে যথাযোগ্য স্থান করে নিচ্ছে। নারী উদ্যোক্তাগণ হাল ছাড়বে না, তারা তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবে।”

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে স্পিকার বলেন, “বর্তমান যুগে অনলাইন ও ই-কমার্সের সুবাদে দেশের সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রেতাদের আকর্ষণ করার সুযোগ পাচ্ছে নারী উদ্যোক্তারা।”

এ সময় নারী উদ্যোক্তাদের আইসিটি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরও দক্ষ ও যোগ্য করে তোলার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে ‘ব্যাপকভাবে পদক্ষেপ’ নেওয়ার আহ্বান জানান স্পিকার।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে এবং উই’র সহকারী প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারজানা তানির সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম ও বাংলাদেশে ভারতের হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।