কৃষি যন্ত্রপাতির আধুনিকায়নে জোর এফএও বিশেষজ্ঞের

বাংলাদেশে কৃষি খাতে করোনাভাইরাস মহামারী আর তিন দফা বন্যার ধাক্কা সামলে উঠেতে যান্ত্রিকীকরণ আর প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ডেভিড ডো।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2020, 04:31 PM
Updated : 16 Oct 2020, 04:32 PM

বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে শুক্রবার ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত সেমিনারের মূল প্রবেন্ধে তার এই পরামর্শ আসে বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

‘এশিয়ার খাদ্য ব্যবস্থাপনায় কোভিড-১৯ এর প্রভাব এবং কৃষির রূপান্তর’ শীর্ষক এই প্রবন্ধে ডেভিড ডো বলেন, মহামারীর মধ্যে পাকিস্থানে খাদ্যের দাম ৬ শতাংশ এবং ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে ৩ থেকে ৪ শতাংশ বেড়েছে। তবে বাংলাদেশ এখনও খাদ্যপণ্যের বাজার তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রাখতে পেরেছে।

তবে মহামারীর মধ্যে তিন দফা বন্যায় বাংলাদেশে কৃষির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সে অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য স্থানীয় কৃষি যন্ত্রপাতির আধুনিকায়নে সহায়তা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন দিন।

জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থার এই প্রতিনিধি বলেন, বৈজ্ঞানিক ও তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর কৃষি ব্যবস্থার ব্যাপক প্রচার করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ তরুণদের এ খাতে দ্রুত নিয়ে আসতে হবে। কৃষির বিকাশে সীমিত প্রণোদনা ও ভর্তুকিও দেওয়া যেতে পারে।

তার মতে, পরিস্থিতির উন্নতি চাইলে বেসরকারি খাতকে সেবা প্রদানকারী হিসেবে অবতীর্ণ হতে হবে। তবে বিক্রয় মূল্য বেঁধে দেওয়া ঠিক নয়। তার চেয়ে এমন তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা চালু করতে হবে, যাতে বেসরকারি সেবাদাতাদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকে।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে যারা কাজ হারিয়েছেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় তাদের প্রশিক্ষিত করে তোলার ওপরও জোর দেন ডেভিড ডো।

তিনি বলেন, মহামারীর মধ্যেও বিশ্ব বাজারে খাদ্যের সরবরাহ ভালো ছিল। এ বছর চাল, গমসহ খাদ্যশস্যের রেকর্ড উৎপাদন হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক অনুষ্ঠানে বলেন, “স্থানীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের অবশ্যই কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উপর জোর দিতে হবে। সেইসাথে টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তির বিকাশে এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে।”

কৃষিসচিব মেসবাহুল ইসলামের সভাপতিত্বে সাবেক কৃষিসচিব নাসিরুজ্জামান, খাদ্যসচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার মণ্ডল, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ম্যাথিউ মোরেল, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রতিনিধি রিচার্ড রাগান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরচিালক আব্দুল মুঈদ সেমিনারে বক্তব্য দেন।