গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে বীজ-উপকরণ সব দেওয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী

সংকট কাটাতে ব্যাপকভাবে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের ওপর জোর দিয়ে এক্ষেত্রে কৃষকদের পেঁয়াজের বীজ, উপকরণ ও প্রযুক্তিসহ সব ধরনের সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2020, 12:19 PM
Updated : 14 Oct 2020, 12:19 PM

কীভাবে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া যায়, সেই কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্যও গবেষক, বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

বুধবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন শীর্ষক এক ভার্চুয়াল কর্মশালায় মন্ত্রী এসব বলেন বলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে আমাদের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে হবে। সরকার পক্ষ থেকে পেঁয়াজ চাষিদের বীজ, উপকরণ, প্রযুক্তিসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। এ বিষয়ে কৃষকদের সাথে আলোচনা করতে হবে, তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।”

বাংলাদেশে এখন যেসব জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়: বারি পেঁয়াজ-১ (শীতকালীন), বারি পেঁয়াজ-২ (গ্রীষ্মকালীন), বারি পেঁয়াজ-৩ (গ্রীষ্মকালীন), বারি পেঁয়াজ-৪ (শীতকালীন), বারি পেঁয়াজ-৫ (গ্রীষ্মকালীন) ও বারি পেঁয়াজ-৬ (শীতকালীন)।

কৃষি তথ্য সার্ভিস-এআইএসের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে রবি ও খরিপ উভয় মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ করা সম্ভব। বারি পেঁয়াজ-২ ও বারি পেঁয়াজ-৩ আগাম ও নাবি চাষ করা যায়।

আগাম চাষের জন্য মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বীজ বুনতে হয় এবং এপ্রিল-মে মাসে ৪০-৪৫ দিনের চারা রোপণ করতে হয়। আর নাবি চাষ করতে হলে মধ্য জুন পর্যন্ত বীজতলায় বীজ বপন করতে হয়। আর ৪০-৪৫ দিনের চারা মূল জমিতে রোপণ করতে হয়।

বারি পেঁয়াজ-২ ও বারি পেঁয়াজ-৩ ছাড়াও ভারত থেকে আসা এগ্রিফাউন্ড ডার্করেড ও এন-৫৩ গ্রীষ্মকালে চাষ করা সম্ভব বলে জানিয়েছে এআইএস।

আগামী গ্রীষ্মকালে দেশের কোন উপজেলায় কতজন চাষী পেঁয়াজ আবাদ করবেন, তার তালিকা প্রণয়ণের পাশাপাশি পেঁয়াজ বীজের চাহিদা নিরূপণ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশে সাধারণত পেঁয়াজের চাষ রবি মৌসুমেই সীমাবদ্ধ এবং বাজারে মে মাস পর্যন্ত এর সহজলভ্যতা থাকে।

বাংলাদেশের কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে ৩০ লাখ টনের মতো। ২০২০ সালে বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৫ লাখ ৫৭ হাজার টন। তবে এই উৎপাদন থেকে গড়ে ২৫-৩০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়।

ফলে দেশে মোট পেঁয়াজের উৎপাদন গিয়ে দাঁড়ায় ১৮ থেকে ১৯ লাখ টনে। দেশের বাকি চাহিদা পূরণ করতে প্রায় ১১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।

বিগত বছরের মতো গত সেপ্টেম্বরেও বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এরপর পেঁয়াজের দাম বেড়ে কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকার কাছাকাছি উঠে গেছে। গত বছর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার পর এই দাম উঠেছিল ২৫০-৩০০ টাকায়।