এসআর গ্রুপের মালিকানাধীন এই রেস্তোরাঁর গুলশান, যমুনা ফিউচার পার্ক ও ধানমন্ডিতে অবস্থিত এই তিন শাখার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ভ্যাট গোয়েন্দাদের দল গত ১৪ সেপ্টেম্বর নিকুঞ্জে এসআর গ্রুপের কার্যালয়ে অভিযান চালায়। এতে এসআর গ্রুপের অধীন ‘দ্য গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরি’র এই তিন শাখাসহ অন্যান্য ব্যবসার গোপন দলিলাদি জব্দ করা হয়।
“তাদের দাখিলপত্রে ভ্যাট হিসেবে পরিশোধ করেছে ৭৫ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৫ টাকা। আর ফাঁকি দিয়েছে ২ কোটি ১০ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪৩ টাকা। অন্যদিকে ভ্যাট আইন অনুযায়ী সময়মতো সরকারি কোষাগারে জমা না দেওয়ায় মাসিক ২ শতাংশ হারে মোট আরোপিত সুদ ৮০ লাখ ২৯ হাজার ৩৬৯ টাকা। সব মিলিয়ে রেস্তোরাঁর তিন শাখার কাছে ভ্যাট ও সুদ হিসেবে পাওনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯০ লাখ ৮৪ হাজার ৩১১ টাকা।”
প্রতিষ্ঠানভিত্তিক হিসাব অনুসারে, এই রেস্তোরাঁর গুলশান শাখায় ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের অগাস্ট পর্যন্ত বিক্রি দেখিয়েছে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯৯৩ টাকা। ওই বিক্রির বিপরীতে ভ্যাট পরিশোধ করেছে ৩০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৩৮ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কাগজপত্র অনুসারে প্রকৃত বিক্রয় মূল্য পাওয়া যায় ৯ কোটি ২ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৫ টাকা।
এতে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ১ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার ৭৮৫ টাকা এবং মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ ৩৪ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮৪ টাকা। মূসক ও সুদসহ পাওনা রাজস্বের পরিমাণ ১ কোটি ৪০ লাখ ৫ হাজার ৩৬৮ টাকা।
কিন্তু জব্দকৃত তথ্য অনুযায়ী এই শাখার প্রকৃত বিক্রি হয়েছে ১০ কোটি ২০ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪৫ টাকা। এতে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ৯৬ লাখ ৯৫ হাজার ৫৭৯ টাকা। আর মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ হিসেবে পাওনা আরও ৪৫ লাখ ৯ হাজার ১০৭ টাকা।
যমুনা ফিউচার পার্কে রেস্তোরাঁর এই শাখার কাছে মূসক ও সুদসহ রাজস্ব পাওনা ১ কোটি ৪২ লাখ ৪ হাজার ৬৮৬ টাকা।
রেস্তোরাঁর অপর শাখাটি ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডে ইম্পেরিয়াল আমীন আহেমদ সেন্টারের সপ্তম তলায়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের অগাস্ট পর্যন্ত দাখিলপত্রে তারা ৬৭ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯০ টাকা প্রদর্শন করে সেই অনুযায়ী ৮ লাখ ৭৯ হাজার ৭৬৮ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেছে।
কিন্তু উদ্ধারকৃত তথ্যে পাওয়া যায় প্রকৃত বিক্রয় মূল্য ১ কোটি ২৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২৭ টাকা। এতে ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ৮ লাখ ৭ হাজার ৫৭৯ টাকা এবং সুদ হিসেবে পাওনা আরও ৬৬ হাজার ৬৭৮ টাকা। ধানমন্ডির এই শাখায় মূসক ও সুদসহ পাওনা রাজস্বের পরিমাণ ৮ লাখ ৭৪ হাজার ২৫৭ টাকা।
এর আগে ঢাকা-রংপুর হাইওয়েতে ফুড ভিলেজ ও ফুড ভিলেজ প্লাসের ২০০ কোটি টাকার গোপন লেনদেনের হিসাব উদ্ধার করেন ভ্যাট গোয়েন্দাদের দল। এ বিষয়েও ইতোমধ্যে ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।