খাদ্য কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না: কৃষিমন্ত্রী

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে পৃথিবীতে খাদ্যাভাব আরও বাড়তে পারে, আ সে কারণে খাবার যেন কোনোভাবেই নষ্ট বা অপচয় না হয়, সেই তাগিদ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2020, 05:05 PM
Updated : 29 Sept 2020, 05:05 PM

এ বিষয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক সচেতনতা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশে খাদ্য নষ্ট ও অপচয়রোধে চ্যালেঞ্জ ও সমাধান’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, “সারা পৃথিবীতেই উৎপাদিত খাদ্যের বিরাট একটি অংশ নষ্ট ও অপচয় হয়। বাংলাদেশেও খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে খাদ্য নষ্ট হয়, যা একদিকে খাদ্য নিরাপত্তায়, অন্যদিকে কৃষকের আয় ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

“এর মধ্যে চলমান মহামারী করোনার কারণে পৃথিবীর অনেক দেশেই খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। সেজন্য কোনোভাবেই খাদ্য নষ্ট ও অপচয় করা যাবে না।”

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। খাদ্য নষ্ট হওয়া ও অপচয় রোধে সরকারও কাজ করছে। ডেল্টা প্ল্যান, কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (সিআইপি-২), জাতীয় কৃষি নীতিতেও এ বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। খাদ্য নষ্ট হওয়া এবং অপচয় কমিয়ে আনতে সরকার কৃষির যান্ত্রিকীকরণ এবং এগ্রো-প্রসেসিংয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে।

সরকারের এসব উদ্যোগের পাশাপাশি উৎপাদক, ক্রেতা-ভোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকায় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার নাওকি মিনামিগুচি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান।

খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে উৎপাদিত খাদ্যপণ্যের এক-তৃতীয়াংশ নষ্ট বা অপচয় হয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় ১৩০ কোটি টন ।

ক্যালরিতে হিসাব করলে প্রায় ২৪ শতাংশ খাদ্য নষ্ট হয়। এছাড়া, ফসল উৎপাদনের জন্য জমি, পানি, পরিবেশ, শক্তি, শ্রম, পু্ঁজি এবং নষ্ট খাদ্য থেকে সৃষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাসের হিসাব আমলে নিলে ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে বলে ধারণা দেওয়া হয় মূল প্রবন্ধে।

বাংলাদেশ সোসাইটি ফর হর্টিকালচারাল সায়েন্স (বিএসএইচএস) এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বাংলাদেশ যৌথভাবে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ সোসাইটি ফর হর্টিকালচারাল সায়েন্সের সভাপতি সালেহ আহমেদ, এফএও’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল মুঈদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম, বিএসএইচএস এর মহাসচিব আফজাল হোসেন ভূইয়া ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন।

‘খাদ্য নষ্ট ও অপচয়’ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী সবাইকে সচেতন করতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ২৯ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক সচেতনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। এবারই প্রথম বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হচ্ছে।

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘খাদ্য নষ্ট ও অপচয় বন্ধ করুন। মানুষের জন্য। পৃথিবীর জন্য।’