সারা দেশের রাস্তা নিয়ে মহাপরিকল্পনা হচ্ছে: অর্থমন্ত্রী

অপ্রয়োজনীয় রাস্তা নির্মাণ বন্ধ এবং দেশব্যাপী পরিকল্পিতভাবে রাস্তা নির্মাণে একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হবে বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2020, 01:49 PM
Updated : 23 Sept 2020, 01:49 PM

এ মহাপরিকল্পনার আওতায় বর্তমানে কত রাস্তা আছে তার হিসাব এবং আগামী বছরগুলোতে কত রাস্তা নির্মাণের প্রয়োজন হবে, তা নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী একথা বলেন।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছিলেন, অপ্রয়োজনীয় রাস্তা নির্মাণ বা প্রশস্ত করা থেকে বিরত থাকতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী কৃষিজমি রক্ষায় নতুন রাস্তা না করে বিদ্যমান রাস্তা সংস্কারের ওপর জোর দেন বলেও পরিকল্পনামন্ত্রী জানান।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাস্তাঘাট করে যাচ্ছি- সেটাতে বেশি আগ্রহী না হয়ে রাস্তার মান ও রক্ষণাবেক্ষণে নজর দিতে হবে। লোকজন রাস্তাঘাট করে ফসলি জমি নষ্ট করে ফেলে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে আরও জোরদার করার জন্য, অর্থবহ করার জন্য আজ এই কমিটি থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির জন্য।

“সারা দেশের জন্য কত রাস্তা আছে আর কত রাস্তা করতে হবে আগামী ১০ বা ২০ বা ৫০ বছর পর, এজন্য একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে এ কমিটি থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে বলেছেন সেভাবে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে।” 

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা বেগম বলেন, “মাস্টারপ্ল্যান তৈরির জন্য একটি কমিটি করতে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ পুরো সরকারের অ্যাক্টিভিটিজগুলো সমন্বয় করে। এ দায়িত্ব আমাদের ওপর পড়েছে।”

সভার সিদ্ধান্ত বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সভায় অনুমোদনের জন্য মোট চারটি প্রস্তাব এবং বাতিলের জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। অনুমোদিত চারটি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ৩৩৪ কোটি ৪০ লাখ ৬১ হাজার ৩৮৩ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় হবে ২২৯ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৮০৪ টাকা এবং বিশ্বব্যাংক ও দেশীয় ব্যাংক থেকে ১০৫ কোটি ১৭ লাখ ৪১ হাজার  ৫৭৯ টাকা ঋণ করা হবে।

মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের অধীন ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএপিএফসিএল) জন্য ৩০ হাজার টন ফসফরিক এসিড আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৮৭ কোটি ৯৭ লাখ ৪২ হাজার ২০০ টাকা।

আরেকটি প্রস্তাবে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনকে (বিসিআইসি) কাতারের মুন্তাজাত থেকে ২৫ হাজার মেট্টিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ৬১ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৯৩৭ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-পাকশী-দাশুরিয়া জাতীয় মহাসড়ক এর কুষ্টিয়া শহরাংশ ৪-লেনে উন্নীতকরণসহ অবশিষ্ট অংশ উন্নীতকরণ প্রকল্পে একটি প্যাকেজের পূর্ত কাজে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান জহিরুল লিমিটেডের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ১৪১ কোটি ২৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬০৪ টাকা।

অর্থমন্ত্রী জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বাস্তবায়নাধীন ঢাকা সিটি নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দোহা ইঞ্জিনিয়ারিং, কোরিয়ার জাংলিম আর্কিটেকচার, দেব কনসালটিং, ডিজাইন প্লানিং ম্যানেজমেন্ট এবং তানিয়া করিম খান অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ৪৩ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ৬৪২ টাকা।

এছাড়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ‘শরীয়তপুর (মনোহর বাজার)-ইব্রাহিমপুর ফেরীঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের একটি প্যাকেজের পূর্ত কাজে একটি মাত্র দরপত্র জমা পড়ে। তাই ১০৫ কোটি ৮৩ লাখ ৮২ হাজার ১০৭ টাকার ক্রয় প্রস্তাবটি বাতিল করে নতুনভাবে ক্রয়কার্য পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় সভায়।