পেনশনের টাকায় ওয়েজ আর্নার বন্ড কেনা যাবে না

দেশের বাইরে অবস্থান করে বিদেশি মুদ্রায় আয় করলেই ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড কেনা যাবে না।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2020, 04:36 PM
Updated : 7 Sept 2020, 04:36 PM

বিশেষ করে বিদেশে চাকরির বিপরীতে পাওয়া পেনশনের অর্থ দিয়ে এই বন্ড কেনা যাবে না। শিপিং বা এয়ারওয়েজে কর্মরতরাও ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত সোমবার একটি সার্কুলারের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোতে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড কেনার যোগ্যতার ক্ষেত্রে বিদ্যমান বন্ড রুলসের পাশপাশি কারা কিনতে পারবেন না, তা স্পষ্ট করা করেছে।

এ তালিকায় রয়েছেন-

>> যেসব প্রবাসী বাংলাদেশি বিদেশে চাকরির বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রায় পেনশন পান, অথবা প্রবাস থেকে পেনশন পান, কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে থাকেন, তারা এ বন্ড কিনতে পারবেন না।

>> ওয়েজ আর্নারের মৃত্যুপরবর্তী চাকরির সুযোগ-সুবিধা বাবদ পাওয়া অর্থ দিয়েও এ বন্ড কেনা যাবে না।

>> বাংলাদেশি মালিকানাধীন শিপিং বা এয়ারওয়েজ কোম্পানির বিদেশি অফিসে নিয়োগ পাওয়া এবং সেখান থেকে বিদেশি মুদ্রায় পাওয়া অর্থ দিয়েও মেরিনার, পাইলট বা কেবিন ক্রুরা ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড কিনতে পারবেন না।

অনেক উন্নত দেশেই ব্যাংকে টাকা রেখে মুনাফা পাওয়া পায় না। প্রবাসীরা তাদের মাসের খরচ মেটানোর পর যে টাকা সঞ্চয় করেন, তা দেশে পাঠিয়ে তারা যাতে লাভবান হতে পারেন, সেজন্য বাংলাদেশে রয়েছে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, তিন বছর মেয়াদি ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড।

এই তিন বন্ডের মধ্যে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডের মেয়াদ পাঁচ বছর। এ বন্ডে ২৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায়। মেয়াদ শেষে মুনাফা পাওয়া যায় ১২ শতাংশ। প্রতি ছয় মাস অন্তর মুনাফা তোলার সুযোগ রয়েছে।

কেউ যদি ছয় মাসে মুনাফা না তোলেন, তাহলে মেয়াদপূর্তিতে মূল অঙ্কের সঙ্গে ষান্মাসিক ভিত্তিতে ১২ শতাংশ চক্রবৃদ্ধি হারে মুনাফা দেওয়া হয়। আট কোটি টাকা বা তার চেয়ে বেশি বিনিয়োগ করলে সিআইপি সুবিধা পাওয়া যায়।

প্রবাসীরা ছাড়াও এ বন্ড কিনতে পারেন বিদেশে লিয়েনে কর্মরত বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, যারা বৈদেশিক মুদ্রায় বেতন-ভাতা পান। মুনাফার হার বেশি হওয়ায় প্রবাসে থাকা অনেকেই এ বন্ডে বিনিয়োগ করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ায় সরকার এ বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সোমবার তিন ধরনের প্রবাসী বন্ড বিক্রির যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে মোট ২২৫ কোটি ৩১ লাখ টাকার প্রবাসী বন্ড বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমন্টে বন্ড বিক্রি হয়েছে ১৬৩ কোটি ২৬ রাখ টাকার।

এছাড়া ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ৪৬ কোটি ১১ লাখ টাকা আর ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড বিক্রি হয়েছে এই সময়ে।