৬৪ কোটি ডলার ঋণ পাচ্ছে রিলায়েন্স ও জেরার মেঘনাঘাট বিদ্যুৎ প্রকল্প

নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ৬৪ কোটি ২০ লাখ ডলার ঋণ পাচ্ছে ভারতের রিলায়েন্স পাওয়ার ও জাপানের জেরার যৌথ মালিকানাধীন কোম্পানি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2020, 06:57 AM
Updated : 31 July 2020, 10:32 AM

রিলায়েন্স বাংলাদেশ এলএনজি অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড নামে এই জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি ২০২২ সালের মধ্যে ৭১৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ওই কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে।

শুক্রবার জেরার ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মেঘনাঘাট প্রকল্পের পূর্ণ অর্থায়নের জন্য ৬৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের ঋণ চুক্তি হয়েছে কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে।

এর মধ্যে ২০ কোটি ডলার দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি। এছাড়া জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোওঅপারেশন এবং আরও চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়ন করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বলে এডিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এ বিদ্যুৎপ্রকল্পের জন্য গতবছর ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করে ভারতের বিদ্যুৎ খাতের অন্যতম বড় কোম্পানি রিলায়েন্স। পরে তারা এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জাপানি কোম্পানি-জেরাকে অংশীদার হিসেবে নেওয়ার কথা জানায়।

চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশের তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে গ্যাস কিনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে রিলায়েন্স বাংলাদেশ এলএনজি অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড। এই কেন্দ্র থেকে ২২ বছর পিডিবিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

প্রতি ডলারের বিনিময় হার ৮০ টাকা ধরে তিতাস গ্যাস প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) গ্যাস বা এলএনজি সরবরাহ করবে ৭ দশমিক ২৬২৫ ডলার দরে। আর রিলায়েন্স এ কেন্দ্রে তাদের উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পিডিবির কাছে বিক্রি করবে ৭ দশমিক ৩১২৩ সেন্ট বা ৫ টাকা ৮৪ পয়সা দরে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী তিন বছরের মধ্যে এই কেন্দ্র উৎপাদনে যাবে এবং উৎপাদিত ৪০০ ভোল্টের বিদ্যুৎ পিজিসিবির মেঘনা ঘাট সাব স্টেশন হয়ে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।

ইতেমধ্যে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি।

অর্থায়ন চুক্তির মধ্য দিয়ে এ প্রকল্পের যাবতীয় চুক্তির কাজ শেষ হওয়ায় এখন নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে জেরার বিবৃতিতে।

রিলায়েন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান অনীল আম্বানি বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আইপিপিতে (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) এটাই সবচেয়ে বড় বিদেশি বিনিয়োগ। এ প্রকল্পের জন্য ঋণ চুক্তি সম্পন্ন করতে পেরে আমর আনন্দিত।”

জেরার প্রেসিডেন্ট সাতোশি ওনোদা বলেন, “বাংলাদেশের ধারাবাহিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদাও অনেক বাড়বে। এই প্রকল্পের পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন ও অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্প্রসারণে আমরা ভূমিকা রাখতে চাই।”

এডিবি বলছে, মেঘনার তীরে এই বিদ্যুৎপ্রকল্প চালু হলে বাংলাদেশের উদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৪ শতাংশ বাড়বে। তাতে বিদ্যুৎ আমদানির প্রয়োজনীয়তা এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা ও তেলের মত ব্যয়বহুল ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর জ্বালানির ব্যবহার কমবে।