ভূমি ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশনে ২,৪০৯ কোটি টাকার প্রকল্প

ভূমির সমন্বিত স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা এবং রেকর্ড ও জরিপকাজের ডিজিটালাইজেশনের জন্য দুই হাজার ৪০৯ কোটি টাকার দুটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2020, 12:55 PM
Updated : 14 July 2020, 12:55 PM

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সর্বমোট ১০ হাজার ১০২ কোটি টাকার মোট আটটি প্রকল্প অনুমোদন পায়।

এই ব্যয়ের পুরোটাই অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে যোগান দেওয়া হবে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১০ হাজার ৬৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা আসবে।

ভূমির দুই প্রকল্পের মধ্যে ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন’ শীর্ষক একহাজার ১৯৭ কোটি টাকার প্রকল্পটি সমন্বিতভাবে ভূমি সংস্কার বোর্ড, ভূমি আপিল বোর্ড, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ও ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণকেন্দ্র বাস্তবায়ন করবে।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপের জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার সক্ষমতা বাড়াতে অপর প্রকল্পের জন্য একহাজার ২১২ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের ভার্চুয়াল সভার পর শেরেবাংলা নগরের কার্যালয় থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব তথ্য জানান।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন বলেন, সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, একটি সফ্টওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে ভূমি সংক্রান্ত সব কার্যালয়ে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, একটি সফটওয়্যার দিয়ে ভূমির উপাত্তভাণ্ডার তৈরি করা হবে এবং ভূমি প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত সকল জনবলকে আধুনিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

অনলাইন অফিস ব্যবস্থাপনা ও ইলেক্ট্রনিক রাজস্ব আদালত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলাও এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য বলে জানান মন্ত্রী।

প্রকল্পটির প্রস্তাবনায় বলা হয়, ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সেবাগুলো (রেকর্ড সংশোধন, হালনাগাদকরণ, সমিন্বত প্রক্রিয়ায় নামজারী, জমাভাগ ও জমা) প্রকল্পটির মাধ্যমে এক জায়গায় আনা হবে।

এর মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর, রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা, ভূমি অধিগ্রহণ, খাস জমি বন্দোবস্ত, রেজিস্ট্রেশন, অর্পিত সম্পত্তি, শত্রু সম্পত্তি, ওয়াকফ, দেবোত্তর ও অন্যান্য সম্পত্তি ব্যবস্থাপনাও করা হবে।

দেওয়ানি মামলার তথ্য ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশনে আওতায় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে সহজে নাগরিকদের কাছে পৌঁছানো এবং এই সিস্টেমের সঙ্গে সরকারের অন্যান্য সেবাকে একীভূত করা হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় কোনও ধরনের ব্যত্যয় যেন না হয়। বিশেষ করে আদিবাসীদের জমি রেকর্ডে কোনও ধরণের অনিয়ম যেন না হয়।”

অপর প্রকল্পের মাধ্যমে পটুয়াখালী জেলার আটটি এবং বরগুনা জেলার ছয়টি উপজেলায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ এবং দেশের ৮৭০টি উপজেলায় আরএস (রিভিশন সার্ভে), সকল মৌজা ম্যাপের ডিজিটালাইড কপিকে জিও রেফারেন্সিং এবং জিওডেটিক জরিপ করে ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ ডাটাবেজ প্রস্তুত করা হবে।

দুটি প্রকল্পই চলতি জুলাই থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়া বাকি ৬টি প্রকল্প হচ্ছে-

>> দ্বিতীয় দফায় ৫৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয় বাড়িয়ে মোট ১ হাজার ৮১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ’

>> ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন’

>> ২৭৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি’

>> ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’

>> ২১৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ’ (২য় পর্যায়)

>> প্রথম দফায় ৯৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয় বাড়িয়ে মোট এক হাজার ৪২৯ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে (রংপুর জোন)’ সংশোধিত প্রকল্প