সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় আদর্শ হতে পারে সীমান্ত হাট: আতিউর

সীমান্ত হাটগুলো চালু করে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় হাট-বাজারে সামাজিক রক্ষার ক্ষেত্রে সেগুলোকে ’আদর্শ’ হিসাবে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2020, 07:43 PM
Updated : 26 June 2020, 04:08 PM

বৃহস্পতিবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এখন সময় এসেছে স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সতর্কতার সঙ্গে এ হাটগুলো আবার খুলে দেওয়ার। স্বভাবতই সীমান্ত হাটগুলোর উপর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ অন্য সাধারণ হাট-বাজারগুলোর চেয়ে বেশি।

“কাজেই সীমান্ত হাটে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ নিশ্চিত করা তুলনামূলক সহজতর হওয়ার কথা। আর এমন করা গেলে এই করোনার সময়ে সীমান্ত হাটগুলো নিরাপদ ও আদর্শ হাট-বাজারের উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে।”

ভারতের সিইউটিএস ইন্টারন্যাশনাল এবং বাংলাদেশের ’উন্নয়ন সমন্বয়ের’ যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ’বর্ডার হাটস: টুলস টু রিডিউস ইনফরমাল ক্রস বর্ডার ট্রেড বিটুইন ইন্ডিয়া অ্যান্ড বাংলাদেশ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন আতিউর।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সারা বিশ্বকে থমকে দিয়েছে নতুন করোনাভাইরাস মহামারী।

ছোঁয়াচে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে ৩ থেকে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।

অসচেতনতা আর অবহেলার কারণে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ উপেক্ষা করে চলেছে মানুষ; নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা মেটাতে চালু থাকা হাট-বাজারে দূরত্ব না মানার প্রবণতা দেখা গেছে বেশি।

ফেনীর সীমান্ত হাট (ফাইল ছবি)

এ প্রেক্ষাপটে হাট-বাজারে সামাজিক দূরত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে সীমান্ত হাটগুলোকে আদর্শ হিসাবে গড়ে তোলার পরামর্শ এল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক আতিউরের কাছ থেকে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে মার্চের শুরুতে বন্ধ হওয়ার আগে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে চারটি সীমান্ত হাট চালু ছিল, যেখানে দুই পারের স্থানীয়রা পণ্য বেচা-কেনা করে থাকেন।

এসব সীমান্ত হাটের গুরুত্ব তুলে ধরে অধ্যাপক আতিউর বলেন, “সীমান্ত হাটগুলো এক দিকে তৃণমূল পর্যায়ে দুই দেশের মানুষের মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব জোরদার করছে, অন্যদিকে এর মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে তার ফলে উপআঞ্চলিক ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার পরিবেশও জোরদার হচ্ছে।”

বিশেষজ্ঞসহ সব অংশীজনকে নিয়ে করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার মাধ্যমে সীমান্ত হাটগুলোকে কিভাবে আরও টেকসই করা যায়, তা নিয়ে ভাবার পরামর্শ দেন তিনি।

অধ্যাপক আতিউর বলেন, করোনাভাইরাসের মতো অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য অবিস্মরণীয় মাত্রার পারস্পরিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার কোন বিকল্প নেই।

অন্যদের মধ্যে ডিএফআইডি’র এশিয়া অঞ্চলের প্রোগ্রাম অ্যান্ড পলিসি ম্যানেজার মোহিত সিপ্পি, অর্থনীতিবিদ ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, এশিয়ান কনফ্লুয়েন্সের নির্বাহী পরিচালক সব্যসাচি দত্ত এবং বিআইডিএস-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ আলোচনায় অংশ নেন।

সিইউটিএসের প্রধান নির্বাহী বিপুল চ্যাটার্জি এতে স্বাগত বক্তব্য দেন। সিইউটিএসের অর্ণব গাঙ্গুলী ও বিজয়া রায় এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের রবার্ট শুভ্র গুদা মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন।