এই সময়ে এ বাজেটের বাস্তবায়ন‘কঠিন’: আইসিএবি

মহামারীর মধ্যে উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরে নতুন অর্থবছরের জন্য যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করা ‘কঠিন হবে’ বলে মনে করছেন দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস বাংলাদেশের (আইসিএবি) সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2020, 03:29 PM
Updated : 13 June 2020, 03:29 PM

শনিবার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। 

আইসিএবি সভাপতি বলেন, “উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রস্তাবিত বাজেট উৎসাহব্যঞ্জক হলেও বাস্তবায়ন অনেকটা কঠিন হবে প্রতীয়মান হচ্ছে; বিশেষত কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর এই সঙ্কটময় সময়ে।”

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন, তাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৮.২ শতাংশ।

এই বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা, তাতে সার্বিক ঘাটতি থাকছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার মত।

এই ঘাটতি মেটাতে বিদেশ থেকে ৮০ হাজার ১৭ কোটি টাকা, দেশের ব্যাংক খাত থেকে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আরও ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছে বাজেটে।

আইসিএবি সভাপতি বলেন, “বিগত অর্থ বছরে ঘাটতি মোকাবেলায় ব্যাংক থেকে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ ঋণ নিতে হয়েছে সরকারকে। ফলে অর্থবছর গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই বছরের ঋণও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে প্রতীয়মাণ হয়। ব্যাংকের ওপর সরকারের নির্ভরশীলতার কারণে প্রাইভেট সেক্টর বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”

তবে সরকার এই অর্থ ‘সঠিকভাবে’ উন্নয়ন খাতে ব্যয় করলে অর্থের প্রবাহের মাধ্যমে বেসরকারি খাতে ওই অর্থ ফিরে আসবে বলে মনে করেন ফারুক।

প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি আরো কিছু প্রস্তাব তুলে ধরা হয় চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের এই সংগঠনের পক্ষ থেকে। তাতে পেশাজীবীদের আয় থেকে উৎসে কর কাটার হার কমাতে বলা হয়।

পেশাজীবীদের আয় থেকে উৎসে কর কাটার হার ১০-১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করার সুপারিশ করা হয় আইসিএবির সংবাদ সম্মেলনে।

পাশাপাশি আপিলাত ট্রাইব্যুনাল ও আপিল কমিশনারেটে আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে দাবিকৃত করের ১০ শতাংশের বদলে ২০ শতাংশ জমার নিয়মে ব্যবসার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছে আইসিএবি।

ফারুক বলেন, “আমরা মনে করি জামানত বাড়ানোর প্রস্তাব ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।“

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে আইসিএবির সদস্য স্নেহাশীষ বড়ুয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আইন অনুযায়ী ভ্যাট অফিস যা দাবি করবে তার বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে ওই অর্থের ১০ শতাংশ জমা রেখে আপিল করতে হয়। কিন্তু এখন আইন পরিবর্তন করে তা ২০ শতাংশ করা হয়েছে।

“ফলে দেখা যাবে আপনি যদি সুবিচার পেতে চান, ১০ কোটি টাকা যদি ভ্যাট অফিস থেকে দাবি করা হয়, বিচারের আগেই আপনাকে ২০ শতাংশ টাকা জমা রাখতে হবে।”

আর বাংলাদেশে ভ্যাট বা কর জমা দিলে, বাড়তি টাকা ‘খুব সহজে ফেরত পাওয়া যায় না’ বলেও মন্তব্য করেন স্নেহাশীষ বড়ুয়া।

আইসিএবির কাউন্সিল মেম্বার ও সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।