বাজেট: বড় ঘাটতি মেটাতে বড় ঋণের পরিকল্পনা

মহামারীর দিনে নতুন অর্থবছরের জন্য বড় ঘাটতি রেখে যে বাজেট প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দিয়েছেন, তা বাস্তবায়ন করতে নির্ভর করতে হবে বড় অংকের ঋণের ওপর।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2020, 07:43 PM
Updated : 11 June 2020, 07:43 PM

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী কামাল।

এর মধ্যে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা তিনি রাজস্ব খাত থেকে যোগান দেওয়ার কঠিন পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। তারপরও তার আয় ও ব্যয়ের হিসাবে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৬ শতাংশের মত।

ঘাটতির এই পরিমাণ আগের যে কোনো বছরের তুলনায় বেশি। অভ্যন্তরীণ উৎস এবং বৈদেশিক ঋণ নিয়ে অর্থমন্ত্রীকে এই ঘাটতি পূরণ করতে হবে।

সেজন্য বিদেশ থেকে ৮০ হাজার ১৭ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা ঋণ করার পরিকল্পনা জানিয়েছেন কামাল।

অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আরও ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছে বাজেটে।

এছাড়া বাজেটে সম্ভাব্য বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৩ কোটি টাকা।

ব্যাংক খাত থেকে ওই বিপুল অংকের টাকা সরকার ধার করলে বেসরকারি খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মন্তব্য করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, “বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা ঋণ পাবেন না। এতে দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যেতে পারে।”

আর পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, “ব্যাংকগুলো সরকারের কোভিড-১৯ মহামারী মেকাবেলার জন্য বিশাল অংকের ঋণ দিচ্ছে। আবার সরকারও বড় অংকের ঋণ নেবে ব্যাংক থেকে। তাহলে ব্যাংকগুলো টাকা পাবে কোথা থেকে?”

বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংকিং খাত থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। সংশোধিত বাজেটে তা বেড়ে ৮২ হাজার ৪২১ কোটি টাকা হয়।

আর বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটে বিদেশি ঋণের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা ৫২ হাজার ৭০৯ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। মহামারীর সঙ্কটে অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে সেই বাজেটের গতিপথ আর আর লাইনে থাকেনি। সংশোধনে তা ৫ লাখ ১ হাজার ৫৭৭ কোটিতে নামিয়ে আনা হয়েছে।