‘৮.২% প্রবৃদ্ধি কোন যাদুবলে আসবে?’
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 11 Jun 2020 11:07 PM BdST Updated: 11 Jun 2020 11:14 PM BdST
-
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। ছবি: পিআইডি
করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে নতুন বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্য ধরেছেন, তা বাস্তবসম্মত বলে মনে করছেন না অর্থনীতিবিদরা।
Related Stories
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর এ লক্ষ্যকে বলেছেন ‘হাস্যকর’; আর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেছেন ‘অবাস্তব’।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান প্রবৃদ্ধির ওই লক্ষ্যের দিকে ইংগিত করে প্রশ্ন করেছেন- মহামারী কী তাহলে শেষ হয়ে গেছে?
অর্থমন্ত্রী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন তাতে অর্থনীতিতে মহামারীর ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, বরাদ্দে মনোযাগ পেয়েছে স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা আর কৃষি খাত।
বিদায়ী অর্থবছরের ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হলেও কোভিড-১৯ দুর্যোগের মধ্যে তা সংশোধন করে ৫ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে হয়েছে।
মহামারীর মধ্যে থমকে যাওয়া অর্থনীতির চাকা পুরোপুরি সচল করার মত পরিস্থিতি কবে হবে সেই নিশ্চয়তা এখনও নেই। তারপরও আগের বারের মতো ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির বড় লক্ষ্য ধরে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা নিয়ে মঙ্গলবার ঢাকার বনানীতে এক কর্মশালায় পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।
এই লক্ষ্যকে ‘হাস্যকর’ হিসেবে বর্ণনা করে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান মনসুর বলেন, “এই মহামারীর সময় দেশের প্রতিটি মানুষ আতঙ্কিত-ভীত, রপ্তানি আয় আর রেমিটেন্স কমছে, আমদানি তলানিতে নেমে এসেছে। কতদিন এই অবস্থা থাকবে অনিশ্চিত।
“তারপরও ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কোন যাদুর বলে আসবে?”
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা বাংলাদেশ চলতি অর্থ বছরের জন্যও ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরেছিল।
কিন্তু মহামারীর মধ্যে দুই মাসের লকডাউন আর বিশ্ব বাজারের স্থবিরতায় তা বড় ধাক্কা খেয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা পুরোপুরি আত্মপ্রত্যয়ী ছিলাম যে এ বছর আমাদের অর্থনীতিতে সেরা প্রবৃদ্ধিটি উপহার দিতে পারব। আমাদের ইপ্সিত লক্ষ্যমাত্রাটি ছিল ৮ দশমিক ২ থেকে ৮ দশমিক ৩ ভাগ।
“কিন্তু করোনার প্রভাব সারাবিশ্বের অর্থনীতির হিসাব-নিকাশকে সম্পূর্ণভাবে ওলটপালট করে দিয়েছে।”
তারপরও ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করার কথা জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “ইকোনমিস্ট গত ২ মে ৬৬টি উদীয়মান সবল অর্থনীতির দেশের তালিকায় বাংলাদেশকে নবম স্থানে রেখেছে। তাদের হিসাবে আমরা অন্যদের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছি।”

রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার ‘ইয়ুথ অনট্রাপ্রনারশিপ: হাউ টু স্টার্ট উইথ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।
তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, বিশ্ব ব্যাংক যেখানে আগামী অর্থবছরে এক শতাংশ মতো প্রবৃদ্ধির কথা বলেছে, সেখানে এই ‘টার্গেট’ কীভাবে সম্ভব?
“প্রবৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৪ থেকে ৫ শতাংশ ধরা যেত। জিডিপির এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়। রাজস্ব আদায়ের যে টার্গেট নেওয়া হয়েছে সেটাও বাস্তবসম্মত নয়। এটা অর্জন করা সম্ভব নয়।”
মহামারীর মধ্যে গত তিন মাস ধরেই ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় স্থবির, শিল্প উৎপাদনও গতিহারা। আমদানি-রপ্তানি নেমে এসেছে তলানিতে। ফলে রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছে এনবিআর।
তারপরও অর্থমন্ত্রী আশা করছেন, নতুন অর্থবছরের ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মধ্যে তিনি রাজস্ব খাত থেকে পাবেন ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত রাজস্ব আয়ের ৮.৫ শতাংশ বেশি। আর নতুন বাজেটের ৬৬ শতাংশ।
নতুন অর্থবছরের বাজেটের ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে ৮৪ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তিনি।
এটা করতে গেলে বেসরকারি খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মন্তব্য করে মির্জ্জা আজিজ বলেন, “এই বিপুল অর্থ ব্যাংকিং খাত থেকে নেওয়া হলে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা ঋণ পাবেন না। এতে দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যেতে পারে।”

“এই যে অনেকগুলো সংকট সামনের দিনগুলোতে ঘনীভূত হতে যাচ্ছে, তার সাথে ৮.২% প্রবৃদ্ধির হার প্রাক্কলন সংগতিপূর্ণ কিনা সেটি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।”
সেলিম রায়হান বলেন, “আমরা কি অনুমান করে নিচ্ছি যে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে এবং তাতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮% এর ওপরে যে গতিধারায় ছিল সেখানে ফিরে আসবে? তার অর্থ হচ্ছে অর্থনীতি পুনরায় দ্রুত সচল হয়ে উঠবে, যেটাকে আমরা ‘ভি শেপড রিকভারি’ বলি। বাস্তবতা তা বলছে কি না সেটা একটা প্রশ্ন থেকে যায়।”
-
কেমন হবে মুদ্রানীতি?
-
অর্থমন্ত্রী ধনীদের প্রাধান্য দিয়ে বাজেটের অঙ্ক মিলিয়েছেন: ফিরোজ
-
সব এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ার কর্মী পাঠানোর দাবি
-
পদ্মাসেতু বাংলাদেশের বিশাল অর্জন: বিশ্ব ব্যাংক
-
একটি সেতু, খুলবে নতুন যুগের দুয়ার
-
দুই বছর পর আমানত সামান্য কমলো গ্রামে
-
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে ১০০ টাকার স্মারক নোট
-
বিদেশি ঋণ ছাড় প্রথমবারের মত ৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
-
মূল্যস্ফীতি আর ঋণপ্রবাহের চ্যালেঞ্জ, কেমন হবে মুদ্রানীতি?
-
অর্থমন্ত্রী ধনীদের প্রাধান্য দিয়ে বাজেটের অঙ্ক মিলিয়েছেন: ফিরোজ
-
সব এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ার কর্মী পাঠানোর দাবি
-
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের বিশাল অর্জন: বিশ্ব ব্যাংক
-
একটি সেতু, খুলবে নতুন যুগের দুয়ার
-
পদ্মা সেতুর পথ ধরে পর্যটনে নতুন প্রাণের প্রত্যাশা
সর্বাধিক পঠিত
- প্রথম টোল দিয়ে বাইক নিয়ে পদ্মা সেতু পার হলেন যিনি
- সাঁতরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী কথা বললেন তরুণী?
- পুলিশের সামনে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা: চলছে প্রতিবাদ
- পদ্মা সেতু দিয়ে গাবতলীর বাস কবে চলবে?
- পদ্মা সেতুর নাটবল্টু খুলে ‘টিকটক’: সেই যুবক গ্রেপ্তার
- ‘প্রধানমন্ত্রীর পর আমিই প্রথম, অনুভূতিটা অন্যরকম’
- পদ্মা সেতুতে মোটর বাইক ওঠা নিষিদ্ধ হল
- পদ্মা সেতু খুলেছে, ‘হাত নেড়ে কুল পাচ্ছে না’ ঢাকার ট্রাফিক পুলিশ
- ‘মাদারীপুর এত কাছে!’
- প্রাথমিকে ছুটি ২৮ জুন থেকে, মাধ্যমিকে ৩ জুলাই