কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে সোমবার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বিকল্প বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।
আগামী বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অধ্যাপক বারকাত বলেন, তাদের বিকল্প বাজেটের আকার ১৩ লক্ষ ৯৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫৪.৯ শতাংশ।
“চলমান অর্থবছরের ২০১৯-২০ সরকারের বাজেটের তুলনায় আমাদের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ২.৪৭ গুণ বড়।”
প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের রাজস্ব আয় থেকে ১২ লক্ষ ৬১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা জোগান হবে বলে ধরা হয়েছে।
আর বাজেটের বাকী ৯.৪ শতাংশ অর্থাৎ ঘাটতি অর্থায়নে (১ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা) জোগান দেবে সম্মিলিতভাবে বন্ড বাজার, সঞ্চয় পত্র বিক্রি থেকে ঋণ গ্রহণ এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্ব।
“আমাদের প্রস্তাবিত বাজেট অর্থায়নে কোনো বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন হবে না,” বলেন অর্থনীতি সমিতির সভাপতি।
“আমাদের প্রস্তাবনায় বাজেটের ব্যয় বরাদ্দ কাঠামোতে গুণগত রূপান্তর ঘটবে। উন্নয়ন বাজেট হবে পরিচালন বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি, যা এখন ঠিক উল্টো। এখন উন্নয়ন-পরিচালন বাজেট বরাদ্দের অনুপাত ৪০:৬০, যা আমাদের প্রস্তাবিত বাজেটে হবে ৫৭:৪৩।”
এই বিকল্প বাজেটে সম্পদ কর থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা, অতিরিক্ত মুনাফার উপর কর থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা, অর্থপাচার রোধ থেকে ৫৫ হাজার কোটি টাকা এবং কালো টাকা উদ্ধার করে ৪০ হাজার কোটি টাকা প্রাপ্তি ধরা হয়েছে।
এই বাড়তি আয় কীভাবে ব্যয় হবে, তারও একটি তালিকাও দিয়েছে অর্থনীতি সমিতি।
বলা হয়েছে, এই ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৯৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘মানুষ বাঁচাও কর্মসূচী বাস্তবায়ন’ হবে, যে কর্মসূচিতে আছে কোভিড-১৯ এর লকডাউনের ফলে সঙ্কটে পড়া প্রায় ৭ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যসংস্থান।
বাজেটে প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য খাতের নতুন বিভাগ ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা বিভাগ’র জন্য ব্যয় হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
এই বিকল্প বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ১২৪ কোটি টাকা, যা চলমান বাজেট বরাদ্দের তুলনায় ২.৪৮ গুণ বেশি।
স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ২৭ হাজার ১২৪ কোটি টাকা, য়া স্বাস্থ্যখাতে বর্তমান বরাদ্দের পৌনে দুই গুণ।
অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা ২০১৫ সাল থেকে এই বিকল্প বাজেট দিয়ে আসছি, এটা আমাদের ছয় নাম্বার বাজেট।”