বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩.৮%: আইএমএফ

করোনাভাইরাস সঙ্কটের ধাক্কায় চলতি বছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার ৩.৮ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2020, 07:05 PM
Updated : 6 June 2020, 03:56 AM

কোভিড-১৯ সঙ্কট শুরুর আগে এই ঋণদাতা সংস্থা যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, জিডিপি প্রবৃদ্ধির এই নতুন প্রাক্কলন তার ৩.৬ শতাংশ পয়েন্ট কম। 

৩ জুন প্রকাশিত আইএমএফের কান্ট্রি রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব হবে মারাত্মক।

বিদেশি মুদ্রার সবচেয়ে বড় দুটো উৎস তৈরি পোশাক রপ্তানি ও রেমিটেন্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকায় বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) ২.৯ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি তৈরি হবে বলেও মনে করছে আইএমএফ।

গত অর্থবছরে বাংলাদেশে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এই অর্থবছরে তা ৮ দশমিক ২ শতাংশে নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় বাংলাদেশে ২৬ মার্চ থেকে শাটডাউন শুরু হলেও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে সরকারের অর্থমন্ত্রী প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের কাছাকাছি হবে বলে আশার কথা শুনিয়েছিলেন।

এ সঙ্কট শুরুর আগে আইএমএফ বলেছিল, চলতি বছর বাংলাদেশ ৭.৪ শতাংশ বাড়তে পারে।

কিন্তু দুই মাসের লকডাউন তুলে সরকার যখন অর্থনীতির চাকা সচল করার চেষ্টায়, আইএমএফ এর প্রতিবেদনে তখন ৩.৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এল।

তবে আগামী বছর ৫.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির যে পূর্বাভাস আইএমএফ দিয়েছিল, তাতে কোনো পরিবর্তন এখনও আনা হয়নি।

এর আগে এপ্রিলের মাঝামাঝি বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার এ বছর ২-৩ শতাংশের মধ্যে নেমে আসতে পারে।

আর আগামী বছরে প্রবৃদ্ধির হার আরও কমে তা ১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৯ শতাংশের মধ্যে হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে বিশ্ব ব্যাংক।

তাদের ওই পূর্বাভাস ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’ মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তখন বলেছিলেন, মহামারীর প্রভাবে প্রবৃদ্ধি কমলেও তা ৬ শতাংশের ওপরে থাকবে।

মহামারীর অভিঘাত মোকাবেলায় সরকার আর্থিক প্রণোদনা আর সামাজিক নিরাপত্তায় যে তহবিল ঘোষণা করেছে, তার আকার ইতোমধ্যে এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। টাকার এই অংক বাংলাদেশের জিডিপির ৩ দশমিক ৭ শতাংশের মত।

ভাইরাসের ধাক্কা সামাল দিতে সরকারকে ১.৬৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে হচ্ছে, যার মধ্যে ৭৩২ মিলিয়ন ডলার আসবে আইএমএফের কাছ থেকে।

আইএমএফ বলছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ধারা তাদের পূর্বাভাসের মতই এগোচ্ছিল। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে যায়। ফলে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়ে।

এই সময়ে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হলেও মূল্যস্ফীতি মোটামুটি স্থিতিশীল আছে, যার পেছনে কৃষি খাতের ভালো ফলনের বড় ভূমিকা দেখছে আইএমএফ।