বাজেটে কৃষিতে ৬% বরাদ্দের দাবি

নতুন বাজেটে কৃষি খাতের জন্য মোট বাজেটের ৬ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক ও গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2020, 05:16 PM
Updated : 23 May 2020, 05:16 PM

কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে অর্থনৈতিক মন্দা, খাদ্য নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান এবং নতুন সৃষ্ট দারিদ্র্য দূর করতে কৃষি খাতের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে এই বরাদ্দ চেয়েছে সংগঠনটি দুটি।

শুক্রবার সংগঠন দুটির আয়োজনে ‘করোনাভাইরাসে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা: প্রসঙ্গ জাতীয় বাজেট ২০২০-২১’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে বক্তরা এই দাবি করেছেন।

খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্কের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেমিনারে আয়োজকরা আসন্ন বাজেটে কৃষিকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিবেচনা, সরকারের খাদ্য মজুদ করার সামর্থ্য বৃদ্ধি, অতি দরিদ্র মানুষের জন্য করোনাভাইরাস পরবর্তী ছয় মাস খাদ্য সহায়তা চালু রাখা, বাজেটে সারের ভর্তুকি কমিয়ে কৃষকদের নগদে ভর্তুকি প্রদান, কৃষিপণ্য মূল্য কমিশন গঠন, দূর্যোগকালীন সময়ে কৃষি বাজার ও মূল্য ব্যবস্থাপনার জন্য বহু-মন্ত্রনালয়ভিত্তিক সমন্বয় কমিটি গঠন করার দাবি করেছেন।

অনুষ্ঠানে খাদ্য সচিব নাজমানারা খানুম বলেন, “কৃষকের নায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। এটাও অনেকটা সত্যি, বিশেষ করে সবজি চাষিরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমরা চেষ্টা করব ভবিষ্যতে যেন সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনতে, সে উদ্দেশ্যে রোপণের পরপরই তালিকা তৈরি করে ফেলব আমরা। কারণ ধান বিক্রির সময়ে আমরা কৃষকের তালিকা সঠিক সময়ে হাতে পাচ্ছি না।”

কৃষি পণ্য পরিবহন নিয়ে এরই মধ্যে বিআরটিসি ও ডাক বিভাগের গাড়িগুলোকে প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এমএম আকাশ দেশের জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান এবং সেই অনুযায়ী কৃষকের বঞ্চিত হওয়ার ব্যাপারটি তুলে ধরে সঙ্কট মোকাবেলায় কৃষকের হাতে নগদ অর্থ দিতে বলেন।

তিনি বলেন, “কৃষককে ক্যাশ সাপোর্ট দিতে হবে। তা নাহলে বীজ, সার, অন্যান্য জিনিস কৃষক সময়মতো কিনতে পারবে না।

“বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক করতে হবে। ভোক্তা ও উৎপাদকের মধ্যে সরাসরি সংযোগ্য ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। তার মাধ্যমে দুজনেই সঠিক মূল্য অর্জন করতে পারবে।”

সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, “করোনাকালীন সময়ে কৃষিপন্য বাজারজাতকরণে যে ইনোভেশানগুলা এসেছে সেগুলোকে সম্প্রসারণ করতে হবে। সেই সাথে সরকার প্রণোদনা দিয়ে অনলাইন কৃষি বাজার সম্প্রসারণ করতে হবে। সরকারকে কৃষি মার্কেটিংয়ে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।”

নিরাপত্তা নেটওয়ার্কের সভাপতি মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বলেন, “কৃষকের জন্য আমরা যদি কোনোভাবে কৃষি মনিটরিং কমিটি গঠন করতে পারি এবং শুরুতে যে কতগুলো ফসল নিয়ে কাজ করা যায় সেগুলো নিয়েও কাজ করতে পারি তাহলে ভালো কিছু হতে পারে।”

সেমিনারে বক্তারা করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে দরিদ্র মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি, ধান-চাল ক্রয়ে কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রনালয়ের মধ্যে সমন্বয়, গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা করতে কৃষকের হাতে সরাসরি নগদ অর্থে প্রণোদনা দেওয়া, বর্গাচাষিদের ঋণ সুবিধার আওতায় আনার জন্য নীতিমালা প্রনয়ন, কৃষিযন্ত্র উৎপাদনে দেশীয় উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা এবং পারিবারিক কৃষির প্রসারে বাজেটে বরাদ্দের দাবি করেন।