তামাক পণ্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নেওয়ার সুপারিশ

তামাক ব্যবহার কমাতে তামাকজাত সব পণ্যের দাম তরুণ ও দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ এসেছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2020, 07:19 PM
Updated : 17 May 2020, 08:00 PM

চলতি অর্থবছরের বাজেট নিয়ে রোববার তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মার প্রস্তাবনায় এই সুপারিশ জানানো হয়।

জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী আবারও বুঝিয়ে দিল সুস্থ থাকার জন্য তামাকপণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কতটা জরুরি। আর এ কারণে আসন্ন বাজেটে সকল তামাকপণ্যের কর ও মূল্য বাড়িয়ে তরুণ এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠির ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া একান্ত প্রয়োজন।

২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য তামাক কর ও দাম সংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের কথা থাকলেও করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে তা সম্ভব হয়নি বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান প্রজ্ঞার কো-অর্ডিনেটর হাসান শাহরিয়ার।

তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এই বাজেট প্রস্তাবনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ, বিআইআইএসএসের রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীরের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

ড. নাজনীন বলেন, সিগারেটের বিদ্যমান চারটি মূল্যস্তর বিলুপ্ত করে দুটি নির্ধারণ করা, তামাক খাত থেকে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি এবং তামাকপণ্যের ব্যবহার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমানোর উপর জোর দেওয়ার জন্য একটি সহজ ও শক্তিশালী তামাক করনীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা খুবই জরুরি।

ড. মাহফুজ কবীর বলেন, কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় তামাক কর সংস্কার একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। এক্ষেত্রে তামাকপণ্যের জন্য নির্ধারিত সম্পূরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট কর আকারে আরোপ করা যেতে পারে এবং অন্যান্য কর পদক্ষেপের সাথে সব ধরনের তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ৩ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করা যেতে পারে। 

অর্থনীতির এই গবেষক বলেন, তা করা হলে সম্পূরক শুল্ক এবং ভ্যাট বাবদ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব এবং সারচার্জ থেকে আরও প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আয় সম্ভব হবে।

তামাকের মতো স্বাস্থ্য হানিকর পণ্য থেকে তরুণ সমাজকে দূরে রাখতে তামাকপণ্যের ওপর কর বৃদ্ধি করে ধূমপান সামগ্রীর দাম তরুণ প্রজন্মের নাগালের বাইরে রাখা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই বলে মত দেন আরেফিন সিদ্দিক।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তামাক বিরোধী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে আসন্ন বাজেটে সিগারেটের মূল্যস্তর সংখ্যা ৪টি থেকে ২টিতে (নিম্ন এবং প্রিমিয়াম) নামিয়ে আনা, বিড়ির ফিল্টার এবং নন-ফিল্টার মূল্য বিভাজন তুলে দেওয়া, ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের (জর্দা ও গুল) মূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রস্তাব করা হয়।