প্রণোদনা তহবিলের অর্থ যোগাতে বিশেষ রেপো

কোভিড-১৯ সঙ্কটে ব্যাংকগুলোর অর্থের জোগান বাড়াতে প্রথমবারের মত এক বছর মেয়াদী ‘বিশেষ রেপো’ চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আবদুর রহিম হারমাছি প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2020, 11:29 AM
Updated : 13 May 2020, 06:03 PM

এই রেপোর (পুনঃক্রয় চুক্তি) মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া অর্থ বা ঋণ শুধুমাত্র সরকার ঘোষিত বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে বিনিয়োগ করা যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট বিভাগ বুধবার এক সার্কুলারে এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করেছে। 

ওই বিভাগের মহাব্যবস্থাপক খুরশীদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,বর্তমানে ১ দিন, ১৪ দিন এবং ২৮ দিন মেয়াদী রেপো চালু আছে। বাংলাদেশে এক বছর মেয়াদী বিশেষ রেপো এটাই প্রথম।

“কোভিড-১৯ মোকাবিলা করতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব প্রণোদনা প্যাকেজ ও তহবিল ঘোষণা করেছে, তার অর্থের জোগান বাড়াতেই এ উদ্যোগ।”

বর্তমানে অন্যান্য রেপোর সুদ হার ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। বিশেষ রেপোর সুদ হার এর মধ্যেই থাকবে বলে জানান খুরশীদ আলম।

ভারতেও কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য এ ধরনের বিশেষ রেপো চালু করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

‘নভেল কোভিড-১৯ এর প্রভাব মোকাবেলায় ৩৬০ দিন মেয়াদী বিশেষ রেপো প্রচলন’ শীর্ষক ওই সার্কুলার ইতোমধ্যে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে-

>> বিদ্যমান রেপো হারকে ভিত্তি ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত মুদ্রানীতি ও মুদ্রা বাজারের তারল্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ বিশেষ রেপোর সুদের হার ও পরিমাণ বাংলাদেশ ব্যাংকের অকশন কমিটি নির্ধারণ করে দেবে। প্রতি অকশনে এ কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

>> অকশনে অংশগ্রহণকারী তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ধারনকৃত এসএলআর (বিধিবদ্ধ জমা বা স্টেটিউটরি লিক্যুইডিটি রেশিও) এর অতিরিক্ত সরকারি সিকিউরিটিজসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জামানত রেখে অর্থ গ্রহণ করতে পারবে।

>> ট্রেজারি বিল এবং বন্ডের অভিহিত মূল্যের উপর যথাক্রমে ১৫ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ মার্জিন রেখে অভিহিত মূল্যের অবশিষ্ট অর্থ রেপো হিসেবে দেওয়া হবে। রেপোর বিপরীতে বন্ধক রাখা সম্পূর্ণ সিকিউরিটিজ (বাজারমূল্য/অভিহিত মূল্য অনুসারে) ‘দায়যুক্ত’ বিবেচিত হবে এবং এই সিকিউরিটিজ অন্য কোনো ক্ষেত্রের জন্য জামানত বা সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হবে না।

>> এ রেপোর মাধ্যমে নেওয়া অর্থ সম্প্রতি ঘোষিত বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে বিনিয়োগ করতে হবে। অর্থ বিনিয়োগের খাতগুলো উল্লেখ করে মাসিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টকে অবহিত করতে হবে।

>> এ রেপোর মাধ্যমে নেওয়া অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের অনুমোদন ছাড়া সরকারি সিকিউরিটিজ ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে বিনিয়োগ করা যাবে না।

>> প্রচলিত নিয়ম অনুসারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে বিড দাখিল করবে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।

কোভিড-১৯ মহামারীর ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ কোটি টাকার দশটি আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সেগুলোর বাস্তবায়ন ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।