প্রণোদনার অর্থ দ্রুত ছাড়ুন: এফবিসিসিআই

করোনাভাইরাস মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা ও ঋণ প্যাকেজের অর্থ দ্রুত গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দিতে ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2020, 05:15 PM
Updated : 6 May 2020, 05:15 PM

বুধবার বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্যবসায়ী নেতা ও অর্থনীতিবিদদের নিয়ে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এই আহ্বান জানান।

‘রোডম্যাপ টু স্টিমুলাস লোন এক্সিকিউশন ২০ হাজার কোটি ও ৩০ হাজার কোটি’ শিরোনামের এই ভার্চুয়াল আলোচনার আয়োজন করে এফবিসিসিআই।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজকে ‘টার্গেটেড ও ফোকাসড’ হিসেবে উল্লেখ করে শেখ ফাহিম বলেন, এর সফলতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব এখন ব্যাংকগুলোর। জাতীয় অর্থনীতিতে বাঁচিয়ে রাখতে হলে এর সুষ্ঠ ও দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি।

সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ প্রসঙ্গ তুলে ধরে ফাহিম বলেন, ৪ কোটি মানুষকে খাদ্য সহযোগিতা, ইনফরমাল সেক্টরে কর্মরতদের আর্থিক সহায়তায় ৭০০ কোটি টাকা, এসএমই শিল্পের ২০ হাজার কোটি, বৃহৎশিল্পে ৩০ হাজার কোটি, রপ্তানি শিল্পে ৫ হাজার কোটি, কৃষিখাতে ৫ হাজার কোটি টাকার সহায়তার ঘোষণা সাহসী পদক্ষেপ। এখন ব্যাংকগুলোকে সরকারের এই সহায়তা কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে।

ব্যাংকের তারল্য সঙ্কট মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তা রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে শক্তি জোগাবে, যাতে আর্থিক খাত একটা শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে প্রণোদনা প্যাকেজ বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।

“বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের ফলে ব্যাংকের তারল্য ৪৬ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডসহ তা ৭০ হাজার কোটি টাকা হওয়ার কথা। স্টেটুটরি লিকুইডিটি রেশিও বা এসএলআর এর মাধ্যমে এক লাখ কোটি এক্সেস টু ফান্ড থাকার কথা। এজন্য সরকার প্রণোদনা তহবিলের আওতায় ব্যাংকগুলোকে সুদের হারের ভর্তুকির পাশাপাশি ম্যাচিং ফান্ড সুবিধা প্রদানের বিষয়টি ব্যাংকিংসহ সেক্টরকে সহায়তা করবে,” বলেন ফাহিম।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন বলেন, দেশের ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা যেন আইন বা কাগজের জটিলতায় প্রণোদনা থেকে অর্থ পেতে কোনো জটিলতায় না পড়েন সে বিষয়ে লক্ষ রাখা দরকার। এসব ব্যবসায়ীদেরকে সহযোগিতা করার জন্য প্রয়োজনে এফবিসিসিআই এ একটি ‘হেল্প ডেস্ক’ স্থাপন করা যায়।

“প্রণোদনা প্যাকেজের সঠিক বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এফবিসিসিআই এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে সমন্বয় খুব জরুরি,” বলেন শফিউল।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ব্যাংকগুলোতে কোনো তারল্য সঙ্কট না থাকায় প্রণোদনা বাস্তবায়নের পথ অনেকটা সহজ হবে। এফবিসিসিআই এর দাবি অনুযায়ী তারা ‘দ্রুত ও সময়মত’ প্রণোদনার প্যাকেজ বাস্তবায়ন করতে আগ্রহী। তবে অবশ্যই ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের ডকুমেন্টেশনের উপর গুরুত্ব দিয়ে সমন্বয় করে কাজ করবে।”

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে ব্যাংকগুলোর এবং প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ ছাড় করানোর জন্য ‘দ্রত সাড়া দিতে হবে’। তা নাহলে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।

এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন আহমেদ, মীর নাসির হোসেন, মাতলুব আহমাদ, জনতা ব্যাংকের চেযারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস ছালাম আজাদ, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আখতারুজ্জামান প্রধান, ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসেন, এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ, প্লাস্টিক শিল্প খাতের ব্যবসায়ী জসীম উদ্দীন অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।