শ্রমিকদের বেতন দিতে ৩১৫০ কোটি টাকা ঋণের আবেদন

করোনাভাইরাস সঙ্কটে শ্রমিকদের বেতন দিতে সরকার যে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল করেছে, সেখান থেকে ঋণ নিতে আবেদন করেছেন ২ হাজার ২০০ কারখানার মালিক।

আবদুর রহিম হারমাছি প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2020, 05:47 PM
Updated : 4 May 2020, 06:00 PM

এরমধ্যে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত কারখানার সংখ্যা ১ হাজার ৬১৫টি; বিকেএমইএভুক্ত ৫৫০টি। বাকি ৩৫টি ইপিজেড এলাকায় অবস্থিত পোশাক কারখানা।

৪৬টি ব্যাংকের মাধ্যমে এই কারখানাগুলোর মালিকদের ৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকা ঋণ পেতে আবেদন জমা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে।

আবেদনের বিপরীতে ইতোমধ্যেই ২ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।

তিনি সোমবার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২ মে ছিল আবেদনের শেষ দিন। সেই সময়  পর্যন্ত মোট ২ হাজার ২০০টি আবেদন জমা পড়ে। যার বিপরীতে টাকার অঙ্কে দাবি করা হয়েছে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

“ইতোমধ্যে ২০০ হাজার কোটি টাকা ছাড়া করা হয়েছে। বাকিটা দু-একদিনের মধ্যেই ছাড় করা হবে।”

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সচিব মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের সংগঠনভুক্ত ১ হাজার ৬১৫ জন কারখানা মালিক প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ঋণ দিতে আবেদন করেছেন।

টাকার অঙ্কে কত- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে বলা যাবে না। হিসাব করে বের করতে হবে।”

নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের বিকেএমইএ থেকে ৫৫০ জনের মতো আবেদন করেছেন।”

টাকার অঙ্ক তিনিও বলতে পারেননি।

৪৬টি ব্যাংকের ৩ হাজার ৪৭ কোটি টাকার মধ্যে ৫৪০ কোটি টাকা চাহিদা দিয়েছে এক্সিম ব্যাংক। ১২২টি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি দিতে এই টাকার আবেদন করেছে ব্যাংকটি।

সাউথইস্ট ব্যাংক ১৫০টি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য ৪৪০ কোটি টাকা চেয়েছে বলে জানা গেছে।

অন্য ব্যাংকগুলোর তথ্য পাওয়া যায়নি।

বৈশ্বিক মহামারী রূপ নেওয়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশেও দেখা দেওয়ার পর এর বিস্তার রোধের পদক্ষেপে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়ায় গত ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রপ্তানিমুখী শিল্প বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরে ২ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা ঘোষণা করে।

নীতিমালায় বলা হয়, যেসব কারখানা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করছেন, তারাই এই তহবিলের অর্থ পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে।

এই তহবিল থেকে ২ শতাংশ সুদে দুই বছরের জন্য ঋণ দেওয়া হবে রপ্তানিমুখী কারখানাগুলোকে।

এই ঋণের অর্থ জোগাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। সেজন্য ব্যাংকগুলোকে অর্থও জোগাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।  

এই তহবিল থেকে কেবল শ্রমিক-কর্মচারীদের সর্বোচ্চ তিন মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ঋণ নেওয়া যাবে। ব্যাংকগুলো ঋণের অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীর ব্যাংক অথবা মোবাইল ব্যাংক হিসাবে সরাসরি দেবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, “কোনো প্রকার নগদ লেনদেন করা যাবে না এবং শ্রমিক-কর্মচারীর ব্যাংক হিসাব ব্যতীত অন্য কোনোভাবে লেনদেন করা যাবে না।”