চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় মাত্র ১ দশমিক ১৮ শতাংশ বাড়িয়ে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য এডিপিতে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরের জন্য মাত্র ২ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা বেশি ধরা হচ্ছে। এই অর্থ দিয়ে আগামী অর্থবছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে।
চলতি অর্থবছরের এডিপি আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা বা ১৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। গত অর্থবছরে তার আগের অর্থবছরের তুলনায় বাড়ানো হয়েছিল প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা।
সেখানে আগামী অর্থবছরের জন্য বাড়ানো হচ্ছে মাত্র ২ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা।
এডিপিতে এত কম প্রবৃদ্ধি গত দশ বছরে হয়নি।
নতুন অর্থবছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য যে বরাদ্দ ধরা হচ্ছে তাতে আভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে জোগান দেওয়া হবে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা বা প্রায় ৬৬ শতাংশ। আর বাকি ৭০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা বা প্রায় ৩৪ শতাংশ যোগান দেওয়া হবে বৈদেশিক সহায়তা থেকে।
চলতি অর্থবছরের এডিপিতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে যোগান ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক সহায়তা থেকে ধরা হয়েছিল ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
অর্থাৎ আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা খাতে ১ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা কম ধরা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. নূরুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও করোনাভাইরাস মহামারীর প্রভাব পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হওয়ায় প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম ধরে এডিপি চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।
“তবে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় প্রায় ৬ শতাংশ বেশি। সে হিসাবে প্রবৃদ্ধিও খুব কম নয়।”
সচিব বলেন, “গত মার্চ মাসে চলতি অর্থবছরের মূল এডিপি থেকে ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা কমিয়ে সংশোধন করে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। তখন বৈদেশিক খাত থেকে প্রকল্প সহায়তা ৬২ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।”
নতুন অর্থবছরের এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা খাতেও সংশোধিত এডিপির তুলনায় প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বেশি ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নূরুল আমিন বলেন, “করোনাভাইরাসের প্রভাব বিশ্বের সকল জায়গায় পড়েছে। তাই সকল বিবেচনায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) দাতাদের সঙ্গে বৈঠক করে এই অর্থ যোগানের সক্ষমতার কথা আমাদের জানিয়েছে। আমরাও ওই অর্থ ধরেই এডিপি প্রণয়ন করছি।”
প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পেলে আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় আগামী অর্থবছরের জন্য নতুন এই এডিপি অনুমোদন দেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।