বাজেটে ‘সর্বাধিক গুরুত্ব’ পাবে স্বাস্থ্য, কৃষি

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় আগামী অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দে সরকার স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন।

জাফর আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2020, 12:28 PM
Updated : 25 April 2020, 02:19 PM

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ এসেছে, বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

“করোনাভাইরাসের মহামারিতে আমাদের স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থা ফুটে উঠেছে। ”

চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের মাত্র জন্য ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে, যা জিডিপি‘র এক শতাংশেরও কম।

মন্ত্রী বলেন, “এ মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে দেশীয় খাদ্য। কারণ বিদেশ থেকে এখন আমদানির খুব বেশি সুযোগ নেই। তাই দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাখাকে সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।”

খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রেখে আরও নতুন নতুন শস্য উৎপাদনে কৃষি খাতের বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলে তিনি  জানান।

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. নূরুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে সকল মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছি, এই দুই খাতের উন্নয়নে যার কাছে যে প্রকল্প আছে তা যেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

“করোনা মহামারীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন চিকিৎসা। অথচ আমাদের দেশে মানুষের আনুপাতিক হারে হাসপাতালের বেড খুব বেশি কম। তাই সরকার মানুষের জীবন বাঁচানোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি গ্রহণ করেছে।”

তিনি আরও বলেন, জিডিপিতে এখনো এককভাবে সবচেয়ে বেশি অবদান কৃষি খাতের। কিন্তু এই খাতে বরাদ্দ খুবই কম। তাই সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা এসেছে যে এই দুই খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে।

কৃষি খাতে চলতি বছরের বরাদ্দ ১৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের মাত্র ২ দশমিক ৬৯ ভাগ।

জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, “আমাদের মতো একটি দেশের স্বাস্থ্য খাতে অবশ্যই জিডিপির ৩ শতাংশ বরাদ্দ থাকা উচিত। এতো কম বরাদ্দ দিয়ে আমাদের মতো এতো বড় জনসংখ্যাকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়।

“দক্ষিণ এশিয়ায় স্বাস্থ্য খাতের আমাদের বরাদ্দ সবচেয়ে কম।”

তবে কৃষি খাতে ব্যাপকভাবে বরাদ্দ বাড়ানোর বিরোধতা করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকারকে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনলেই চলবে।

“সরকার এখন বীজ ও সারে যে ভর্তুকি দিচ্ছে তাতে চলবে। কিন্তু ফড়িয়াদের বাদ দিয়ে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সরকার ধান কিনতে পারলেই কৃষি উৎপাদন আরও বাড়বে।”

বর্তমান ব্যবস্থায় কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না বলেই এখনো দেশে অনেক জমি খালি পড়ে থাকছে তিনি মন্তব্য করেন।