দেশের ২২টি উপজেলায় এবার পরীক্ষমূলকভাবে অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে বোরো ধান সংগ্রহ করবে সরকার।
Published : 20 Apr 2020, 03:50 PM
যে ২২টি উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ করা হবে তা নির্ধারণ করে দিয়ে সোমবার খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে চিঠি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
গত আমন মৌসুমে সাত বিভাগের ১৬ উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে অ্যাপের মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনে সরকার।
তবে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে খাদ্য মন্ত্রণালয় এখন ২২টি উপজেলা থেকে অ্যাপের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
‘ডিজিটাল খাদ্যশস্য সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা ও কৃষকের অ্যাপ’-এর মাধ্যমে ঢাকার সভার উপজেলা এবং গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, ভোলা, নওগাঁ, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা (সদর দক্ষিণ) এবং বরিশাল সদর উপজেলায় বোরো ধান সংগ্রহ করা হবে।
চলতি বোরো মৌসুমে সাড়ে ১১ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৩৬ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ৩৫ টাকা কেজিতে দেড় লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল এবং সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজিতে ছয় লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান কেনা হবে।
কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন ও ধান সরবরাহের আবেদনের জন্য আগে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত সময় রাখা হলেও দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে নিবন্ধনের সময় ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, “স্থানীয় পরিস্থিতি বিবেচনায় অ্যাপের মাধ্যমে ধান কেনা যৌক্তিক বলে প্রতীযয়মান না হলে বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের তীব্রতা বাড়ার আশঙ্কা থাকলে জেলা সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ নীতিমালা অনুসরণ করে প্রচলিত পদ্ধতিতে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।”
কৃষকের অ্যাপ
অ্যাপে ধান বিক্রি করতে একজন কৃষককে তার ফোনে ‘কৃষকের অ্যাপ’ ডাউনলোড করে জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।
কৃষকের স্মার্টফোন না থাকলে ইউনিয়ন তথ্যসেবাকেন্দ্রে গিয়ে তিনি এ সেবা নিতে পারবেন। ধানের নাম, জমির পরিমাণ, কী পরিমাণ ধান বিক্রি করতে চান- এসব তথ্য জানিয়ে ওই অ্যাপের মাধ্যমে সরকারের কাছে ধান বিক্রির আবেদন করবেন কৃষক।
এরপর নিবন্ধন, বরাদ্দের আদেশ ও দাম পরিশোধের সনদসহ তথ্য এবং ধান বিক্রির জন্য কবে কোন গুদামে যেতে হবে, সেসব তথ্য এসএমএসে কৃষককে জানিয়ে দেওয়া হবে।
আবেদনকারী বেশি হলে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে ধান কেনা হবে।
খাদ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত উপজেলা কমিটি আবেদনকারীদের মধ্যে লটারি করে কৃষক নির্বাচন করবে।
এছাড়া একটি অপেক্ষমাণ তালিকা করা হবে। নির্বাচিত কোনো কৃষক ধান না দিলে সেই তালিকা থেকে অন্য কৃষকের কাছে থেকে ধান কেনা হবে।