রোববার সকালে গণভবন থেকে এক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রী এই কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করে বলেন, তাৎক্ষণিক, স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়দী ও দীর্ঘমেয়াদী- এই চারভাগে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চারটি কার্যক্রম নিয়ে সরকারের এই কর্মপরিকল্পনা সাজানো হয়েছে।
এই চারটি কার্যক্রম হবে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা, আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা এবং বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা।
সামাজিক সুরক্ষার আওতা বৃদ্ধি
ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সব ধরনের অফিস আদালতের পাশাপাশি যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। এই ‘লকডাউনের’ মধ্যে হঠাৎ কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্র কর্মজীবী মানুষ যেন টিকে থাকতে পারে, সেজন্য পদক্ষেপ নেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা জনগণ, দিনমজুর এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা হবে।
এর আওতায় সরকার পাঁচ ধরনের কার্যক্রম নেবে।
>> বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
>>১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রয়
>> লক্ষ্যভিত্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ
>> সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্যপ্রবণ ১০০ উপজেলায় বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের জন্য ভাতা কর্মসূচির আওতা বাড়িয়ে শতভাগে উন্নীত করা
>> জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত অন্যতম কার্যক্রম গৃহহীন মানুষদের জন্য গৃহ নির্মাণ কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়ন করা
সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা
তবে বাংলাদেশে ঋণের স্থিতি ও জিডিপির অনুপাত কম (৩৪%) হওয়ায় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তে সামষ্টিক অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আর্থিক সহায়তা: সরকার ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে কিছু খাতের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রবর্তন করবে, যার মূল উদ্দেশ্য হল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজে বহাল রাখা এবং উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখা।
এর আওতায় প্রধানমন্ত্রী শিল্প ও বাণিজ্য খাতের জন্য মোট পাঁচটি প্যাকেজের আওতায় ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা রয়েছে, যা জিডিপির ২.৫২ শতাংশ।
মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব থেকে উত্তরণে মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানো ‘অত্যন্ত জরুরি’।
“বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে সিআরআর এবং রেপোর হার কমিয়ে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যা আগামীতেও প্রয়োজন অনুযায়ী অব্যাহত থাকবে। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য থাকবে যেন মুদ্রা সরবরাহজনিত কারণে মুদ্রাস্ফীতি না ঘটে।”