এডিপির বিদেশি সহায়তায় কাটছাঁট

প্রকল্প সহায়তা থেকে নয় হাজার ৮০০ কোটি টাকা কমিয়ে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2020, 11:29 AM
Updated : 19 March 2020, 11:29 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এই সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয় বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন।

পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চলতি অর্থবছরের ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার এডিপি থেকে ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এর পুরোটাই প্রকল্পের বিদেশি সহায়তা থেকে ছাঁটা হয়েছে।

“বাস্তবতার নিরিখেই এই সংশোধন করা হয়েছে। প্রতিবছর এডিপি বাস্তবায়নে গিয়ে হোঁচট খেতে খেতে শেষ পর্যন্ত সংশোধন করতে হয়।”

অনুমোদন পাওয়া সংশোধিত এডিপিতে সরকারের নিজস্ব তহবিল বা আভ্যন্তরীণ উৎস থেকে যোগান অপরিবর্তিত ১ লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা, আর বৈদেশিক উৎস থেকে যোগান দেওয়া হবে ৬২ হাজার কোটি টাকা।

মুল এডিপিতে বৈদেশিক উৎস থেকে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা যোগান দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৈদেশিক উৎসের বরাদ্দ থেকে ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ অর্থ কমানো হয়েছে।

এসময় বৈদেশিক বরাদ্দ থেকে কমানোর কারণ জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে দাতাদের নীতিমালার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে ব্যয় কিছুটা পিছিয়ে পড়লে শেষ পর্যন্ত বরাদ্দ কাটছাঁট করতে হয়।

“তাই প্রকল্প সহায়তার শতভাগ অর্থ ব্যয় করা কখনোই সম্ভব হয় না। এর ফলে প্রতিবছরই বৈদেশিক সহায়তা খাত থেকে বরাদ্দ কাটছাঁট করতে হয়।”

এনইসি সভায় অনুমোদন পাওয়া সংশোধিত এডিপিতে দেখা যায়, সর্বোচ্চ বরাদ্দ বা ২৪ দমমিক ৫৯ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহন খাতে। এ খাতের জন্য মোট ৪৭ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ২৬ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা বা ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতের জন্য।

তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৩ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে বিদ্যুৎ খাতের জন্য।

চতুর্থ সর্বোচ্চ প্রায় ২০ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ধর্ম ও শিক্ষা খাতের জন্য।

পঞ্চম সর্বোচ্চ প্রায় ১৬ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের জন্য।

গ্রামীণ অর্থনীতি বা পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতের জন্য ১৫ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ।

স্বাস্থ্য খাতের জন্য প্রায় ১০ হাজার ১০৯ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ২৪ ভাগ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও কৃষি খাতের জন্য ৬ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ, পানি সম্পদ খাতের জন্য ৬ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা বা দশমিক ৩০ শতাংশ এবং জনপ্রশাসন খাতের জন্য ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার জন্য মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ২৭৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৪ হাজার ৪১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, বাকি ৩ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে যোগান দেওয়া হবে।