পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মঙ্গলবার একনেক সভার পর সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “সাত মাসে এডিপি‘র আওতায় ৭৯ হাজার ৭৮৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে। এই ব্যয় মোট বরাদ্দের ৩৭ দশমিক ০৯ শতাংশ।”
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ১৫ হাজার ১১৩ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দেয় সরকার।
গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ৭০ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা ব্যয় করতে পেরেছিল সরকার, যা ছিল মোট বরাদ্দের ৩৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।
মন্ত্রী বলেন, “এবারের ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে বাস্তবায়নের হারে ২ শতাংশ পিছিয়ে থাকলেও টাকার অঙ্কে ৯ হাজার কোটি টাকা বেশি বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।”
অর্থবছরের শেষের দিকে গিয়ে বাস্তবায়নের গতি বাড়িয়ে গত অর্থবছরের চেয়ে বেশি বাস্তবায়নের আশাবাদী মান্নান।
এদিকে এডিপি বরাদ্দ ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ কমিয়ে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকায় নামিয়ে আনার প্রস্তাব করছে পরিকল্পনা কমিশন।
পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভার এই সিদ্ধান্ত আগামী এনইসি সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. নূরুল আমিন।
মঙ্গলবার বিকালে এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নানের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৈঠকে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের এডিপি থেকে ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা কাটছাঁট করে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকায় সংশোধন করার প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে।”
চলতি মাসের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে এই প্রস্তাবটি উঠবে।
নূরুল আমিন বলেন, “এবার এডিপির যে অর্থ কাটছাঁট করা হচ্ছে, তা মূলত পুরোটাই প্রকল্প সহায়তার বরাদ্দ থেকে হচ্ছে। ফলে মূল এডিপিতে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বৈদেশিক সহায়তা খাত থেকে যে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার জোগান দেওয়ার কথা ছিল, তা ৬২ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হচ্ছে।”
আর সরকারি তহবিল থেকে যে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা জোগান দেওয়ার কথা ছিল, তা একই থাকছে।
বর্ধিত সভায় অনুমোদন পাওয়া প্রস্তাবে দেখা যায়, সর্বোচ্চ প্রায় ২৫ শতাংশ বা ৪৭ হাজার ৫৪৫ কোটি বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে সড়ক পরিবহণ, সেতু বিভাগের জন্য।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ২৬ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা বা ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাতের জন্য।
তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৩ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ৩১ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে বিদ্যুৎ খাতের জন্য।
চতুর্থ সর্বোচ্চ প্রায় ২০ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ধর্ম ও শিক্ষা খাতের জন্য।
পঞ্চম সর্বোচ্চ প্রায় ১৬ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের জন্য।
পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতের জন্য ১৫ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাতের জন্য প্রায় ১০ হাজার ৫২২ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৪৫ ভাগ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়াও কৃষি খাতের জন্য ৩ দধমিক ৪৮ শতাংশ, পানি সম্পদ খাতের জন্য ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ, জনপ্রশাসন খাতের জন্য ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং শিল্প খাতের জন্য ৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।