বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর ব্যয় ৭২% বাড়ল

যমুনা নদীর উপর নির্মিতব্য বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর প্রকল্প সংশোধনে ব্যয় বেড়েছে ৭২ শতাংশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2020, 01:39 PM
Updated : 3 March 2020, 01:39 PM

বর্তমান বঙ্গবন্ধু সেতুর রেলপথে ওজন সীমাবদ্ধতার কারণে ভারী পণ্যবাহী ট্রেন পূর্ণ গতিতে চলতে পারে না। এজন্য আলাদা করে রেলসেতু নির্মাণ হচ্ছে।

২০১৬ সালে এই প্রকল্প গ্রহণের সময় বরাদ্দ অনুমোদন হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা।

চার বছরের মাথায় নতুন করে ৭ হাজার ৪৭ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার একনেক সভায় সংশোধিত প্রকল্পটি অনুমোদন পায়।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, এখন ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে মোট প্রকল্প ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

একইসঙ্গে প্রকল্পটির মেয়াদ ২ বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালে ডিসেম্বর মাসে শেষ করার নতুন লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “এই প্রকল্পের জন্য মূল অর্থের জোগান দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা (জাইকা)। সংস্থাটির একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই প্রকল্পটির প্রকৃত ব্যয় আরও বেশি হবে।”

জাইকার মতে, যমুনা নদীর ওপরে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই ডাবল রেললাইন সেতু নির্মাণের এই প্রকল্পটিতে প্রায় ১৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।

“জাইকা সরকারের কাছে এই প্রস্তাব দিলে সরকারও জাইকার সমীক্ষা অনুযায়ী কাজ করতে রাজি হয়। যার ফলে আজ প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়,” বলেন মান্নান।  

তিনি বলেন, এই প্রকল্পটির জন্য জাইকার ৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। এই সংশোধনীতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে তাদের সহায়তাও প্রায় ৪ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা বাড়ছে। ফলে প্রকল্পটিতে জাইকার সহায়তা দাঁড়াচ্ছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা।

প্রকল্পের কার্যপত্রে বলা হয়, “বাস্তবতার নিরিখে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরামর্শক খাতে ব্যয় হ্রাস এবং বিশদ নকশা ও সুপারভিশন পরামর্শক খাতে ব্যয় কমে যাওয়ায় প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন করা হচ্ছে।”

সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাবে জমি অধিগ্রহণ, জমি ব্যবহার ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ মোট ৩৪৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে, এটি অনুমোদিত মূল প্রকল্প প্রস্তাবে ছিল না।

এদিকে ‘বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পে তিন বছরে আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ২ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ এ সময়ে খরচ হয়েছে ২১৯ কোটি ১২ লাখ টাকা। একই সময়ে বাস্তব অগ্রগতি ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

এদিনের বৈঠকে এই প্রকল্পটিসহ ১০ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ের আট উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এই বিপুল ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার ৯৬৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা জোগান দেওয়া হবে, প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৪২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিলে থেকে ৭৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা জোগান দেওয়া হবে।

অনুমোদিত অন্য প্রকল্প

>> ‘জরুরি পানি সরবরাহ’ প্রকল্প। ব্যয় ৭৩২ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

>> ‘আমিনবাজার ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন’ প্রাকল্প। ব্যয় ৭৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

>> ‘শেখপাড়া (ঝিনাইদহ)-শৈলকুপা-লাঙ্গলবাঁধ (শ্রীপুর) ওয়াপদামোড় (মাগুরা) জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ’ প্রকল্প। ব্যয় ২৬৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

>>  ‘রাজশাহী বিসিক শিল্পনগরী-২’ প্রকল্প। ব্যয় ৪০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

>>  ‘পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার মুন্সিগঞ্জ হতে খানপুর কাজিরহাট হতে রাজধরদিয়া পর্যযন্ত যমুনা নদীর ডানতীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প। ব্যয় ৪৩৩ কোটি ১০ লাখ টাকা।

>> ‘কুড়িগ্রাম জেলার কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট ও ফুলবাড়ি উপজেলাধীন ধরলা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণসহ বাম ও ডানতীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প। ব্যয় ৫৯৫ কোটি টাকা।

>> ‘পদ্মা নদীর ভাঙ্গন হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ও শাজাহানপুর এলাকা রক্ষা’ প্রকল্প। ব্যয় ৫৬৬ কোটি ১২ লাখ টাকা।