বাংলাদেশের সঙ্গে  ৮২ দেশের বাণিজ্য ঘাটতি

বিশ্বের ৮২টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2020, 02:04 PM
Updated : 21 Jan 2020, 02:04 PM

মঙ্গলবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাণিজ্য ঘাটতির তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশের মোট ১৫ হাজার ৪২১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে।

মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, উগান্ডাসহ ৮২টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি আছে।

অর্থাৎ এই দেশগুলোর প্রত্যেকটি থেকে থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে, রপ্তানি করে তার চেয়ে কম।

ঘাটতি মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান টিপু মুনশি।

তিনি জানান, বর্তমানে নেপাল ছাড়া সার্কভুক্ত সব দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি আছে।

২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তানে মোট পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল এক হাজার ৪০৮ দশমিক ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সময় এসব দেশ থেকে আমদানির পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৩৯৬ দশমিক ৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

অর্থাৎ গত অর্থবছরে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৬ হাজার ৯৮৮ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৭০০ কোটি ডলার।

এদিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানিয়েছেন, ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ে ৯ লাখ ২ হাজার ৪৮২ জন নারীকর্মী গৃহকর্মসহ বিভিন্ন পেশায় বিদেশ গেছেন।

ফাইল ছবি

বাংলাদে<শের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবে নারীকর্মীদের নিগ্রহের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “গত ২৭ নভেম্বর জয়েন্ট টেকনিক্যাল কমিটির সভায় নারী শ্রমিকদের সুরক্ষার বিষয়ে সৌদি আরব সরকারের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বিদেশগামী নারী কর্মীদের যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া তদারকির মাধ্যমে অধিকতর সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ছয় সদস্য বিশিষ্ট ‘বিদেশগামী নারী কর্মী সুরক্ষা সেল’ গঠন করা হয়েছে।”

মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ থেকে এখন পর্যন্ত ১৭৩টি দেশে কর্মী পাঠানো হয়েছে।

সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানি বাড়লেও মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ কাতার, কুয়েত ও বাহরাইনে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে কর্মী কম গেছে।

গত বছর সৌদি আরবে ৩ লাখ ৯৯ হাজার কর্মী পাঠানো হয়। ২০১৮ সালে পাঠানো হয়েছিল ২ লাখ ৫৭ হাজার ৩১৭জন।  কাতারে গত বছর ৫০ হাজার ২৯২ জন কর্মী পাঠানো হয়। ২০১৮ সালে কাতারে পাঠানো হয়েছিল ৭৬ হাজার ৫৬০ জন। ২০১৯ সালে কুয়েতে ১২ হাজার ২৯৯ জন কর্মী পাঠানো হয়। আগের বছর কুয়েতে পাঠানো হয়েছিল ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। বাহরাইনে গত বছর ১৩৩ জন কর্মী পাঠানো হয়েছে। আগের বছর ২০১৮ সালে এ দেশটিতে ৮১১ জন কর্মী পাঠানো হয়েছিল।

ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত বছর কর্মী পাঠানো আগের বছরের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। গত বছর ওমানে ৭২ হাজার ৬৫৪জন পাঠানো হয়। ২০১৮ সালে ওমানে গিয়েছিলেন ৭২ হাজার ৫০৪ জন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত বছর ৩ হাজার ৩১৮ জন পাঠানো হয়। আগের বছর দেশটিতে পাঠানো হয়েছিল ৩ হাজার ২৩৫ জন।

ইমরান জানান, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ে বেকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৬৬ লাখ ৩৩ হাজার ২৫৪ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী বৈদেশিক কর্মসংস্থান লাভ করেছেন এবং ১৫৩ দশমিক ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন।

বিদেশে কর্মী প্রেরণে প্রতারণা বন্ধে ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন ২০১৩’ প্রণয়নের কথা বলেন তিনি।

এই আইনে বিদেশে শ্রমিক প্রেরণে প্রতারণার জন্য দায়ী ব্যক্তিকে অনধিক ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং অন্যূন এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান আছে। এই আইনে অপরাধের মাত্রাভেদে ১০ বছরের সাজার বিধান রয়েছে।

আইনটি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান বলে জানান মন্ত্রী।