সব ঋণে ৯% নিয়ে আপত্তি ব্যাংকারদের

ঢালাওভাবে সব ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ করা নিয়ে আপত্তি তুলেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2020, 05:54 PM
Updated : 14 Jan 2020, 05:54 PM

মঙ্গলবার গভর্নর ফজলে করিমের সঙ্গে বৈঠকে বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা বলেছেন, তারা উৎপাদন খাতে ৯ শতাংশ হারে ঋণ বিতরণ করতে পারলেও ভোক্তা ঋণ ও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে এই হারে ঋণ বিতরণ করতে পারবে না।

এই দুই খাতে সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ দিলে ব্যাংকগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে জানিয়েছেন তারা।

সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এবং ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) নেতাদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ঋণের সুদ হার হবে ৯ শতাংশ। জানুয়ারি নয়, নতুন বছরের এপ্রিল থেকে এই হার কার্যকর হবে।

আর সাধারণ জনগণের কাছ থেকে নেওয়া আমানতের বিপরীতে ব্যাংকগুলো কাউকে ৬ শতাংশের বেশি সুদ দেবে না।

তার আগে ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে উৎপাদন খাতে অর্থাৎ শিল্প খাতে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

৩০ জানুয়ারির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আগে জানতেন, ৯ শতাংশ সুদ শুধু উৎপাদন খাতে কার্যকর হবে। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে, ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ঋণে ৯ শতাংশ সুদ কার্যকর হবে। নতুন ও পুরোনো সব ধরনের ঋণে ৯ শতাংশ সুদ কার্যকর হবে। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চাহিদা।”

মঙ্গলবারের ব্যাংকার্স সভায় এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় ব্যাংকাররা বলেন, ঝুঁকি বেশি হওয়ায় ভোক্তা ঋণ এবং এসএমই খাতে ৯ শতাংশে ঋণ বিতরণ করা সম্ভব নয়। বিষয়টি বিবেচনার জন্য তারা তারা গভর্নরকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

বৈঠক শেষে ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা সভায় অনুরোধ করেছি, রিটেইল এবং এসএমই লোনটা এই ৯ শতাংশ থেকে যেন আমাদের অব্যাহতি দেয়া হয়।”

তিনি বলেন, এপ্রিল থেকে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা হবে। এটি বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো তারা তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ৬ শতাংশ হারে আমানত নিশ্চিত করা। কারণ ৬ শতাংশে আমানত পেলেই ৯ শতাংশ ঋণ বিতরণ করা সম্ভব হবে।

“আমরা বলেছি, জামানত বিহীন ঋণ ঝুঁকিপূর্ণ। কনজ্যুমার ক্রেডিট এবং এসএমই ঋণ অনেক ক্ষেত্রেই জামানত থাকে না। সে কারণেই এ দুই ঋণে ৯ শতাংশ থেকে বাদ দিতে অনুরোধ করেছি।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলামও একই কথা বলেন।  তিনি বলেন, ভোক্তা ঋণ এবং এসএমই খাতকে সিঙ্গেল ডিজিটের ভেতরে না নিয়ে আসার সুপারিশ করেছেন ব্যাংকাররা।

সার্বিক বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করবে বলে জানান সিরাজুল ইসলাম।

বর্তমানে ব্যাংক ভেদে উৎপাদন খাতে সুদ হার ১১ থেকে ১৪ শতাংশ।