বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট নয়। কারণ এটা দারিদ্র্য দূর কিংবা কমাতে পারে হয়ত, কিন্তু সবসময় বৈষম্যকে তুলে ধরে না।”
বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার প্রাঙ্গণে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত দুই দিনের বাংলাদেশ সামাজিক নিরাপত্তা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকারের এমন মন্তব্য আসে।
সমন্বিত উন্নয়নে প্রজন্মান্তরে চলা দারিদ্রের চক্র দূর করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “একটি প্রজন্ম যদি দরিদ্র হয়, দারিদ্র্য থেকে বের হয়ে আসতে যদি বিশেষ নজর না পায়, তাহলে তাদের পরবর্তী প্রজন্মও গরিব হবে। এই চক্রই চলমান থাকবে।
”এ কারণে আন্তঃপ্রজন্মের দারিদ্র্যকে তুলে না ধরলে আমরা দারিদ্র্যের চক্রকে বন্ধ করতে পারব না। এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে দারিদ্র্য ছড়িয়ে পড়বে। এ কারণে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
কেবল সুযোগ সৃষ্টি নয়, সেই সুযোগ গ্রহণের সক্ষমতা তৈরির পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ”সুযোগ তৈরি হওয়ার পর যদি দরিদ্র জনগোষ্ঠী কর্মে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য না হয়, তাহলে সেই সুযোগ কাজে লাগানো যাবে না। এ কারণে এমনভাবে সামাজিক নিরাপত্তা নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে, যা দরিদ্রদের মূলধারার অর্থনীতি ও উন্নয়নে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবে। কেবল এর মাধ্যমে সমন্বিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারব।”
জাম্বিয়ায় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাস্তবায়িত সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের উদাহরণ টেনে শিরীন শারমিন বলেন, “সেখানে দেখা গেছে, সামাজিক সুরক্ষা কোনো ব্যয় নয়, এটা বিনিয়োগ। অনেক সময় যুক্তি দেখানো হয়, সামাজিক সুরক্ষা রাষ্ট্রের বড় ব্যয়ের খাত, কীভাবে আমরা এটাকে চলমান রাখব।
”কিন্তু আমরা এই উদাহরণ থেকে বুঝতে পারি, এটা খরচ নয় বরং বিনিয়োগ। কারণ, এটা সামাজিক মূলধন গড়ায় এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। একইসঙ্গে এই খাতে পাওয়া নগদ টাকা স্থানীয় উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে ।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম।
অন্যদের মধ্যে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব কোঅপারেশন মরিজিউ চাও, ডিএফআইডি প্রধান জুডিথ হার্বার্টসন, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি, অস্ট্রেলিয়া হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি অ্যাঞ্জেলা নওম্যান এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর তমো পতিয়াইনেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।