রোববার এনইসি সম্মেলন কক্ষে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এতথ্য জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার জন্য আজকের মধ্যেই কমিটি গঠন করার জন্য গভর্নরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
“তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নরকে প্রধান করে সরকারি ও বেসরকারি খাত থেকে প্রতিনিধি নিয়ে সাত সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করবেন। কমিটি সুদহার না কমানোর কারণ ও সমাধানগুলো নির্দিষ্ট করে বলে দেবেন।”
কীভাবে সুদের হার কমানো হবে, তার কৌশল ঠিক করে কমিটি সাত দিনের মধ্যেই গভর্নরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে বলে তিনি জানান।
“এই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারব কীভাবে সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। এরপর তা কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে তা প্রজ্ঞাপন বা সার্কুলারের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।”
বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যাংক ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ ও আমানতের সুদের হার ৬ শতাংশে রাখতে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসায়ী মহলের দাবি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একাধিকবার এবিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।
গত অগাস্টে ঋণ ও আমানতের সুদহার যথাক্রমে ৯ ও ৬ শতাংশ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে তাগাদা দেওয়া হলেও তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না।
ব্যাংকগুলো এখন ছয় থেকে থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ শতাংশ পর্যন্ত সুদে আমানত সংগ্রহ করছে এবং ঋণের শ্রেণিভেদে সাড়ে ৯ সাড়ে ২০ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করছে।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে খেলাপি ঋণ কমানোর ঘোষণা দিলেও তা না কমে উল্টো বেড়েছে যাওয়ার মুস্তফা কামাল বলেন, “খেলাপি ঋণ এদেশের সকল নাগরিকের অর্থ, তাদের কষ্টার্জিত টাকা। সুতরাং তাদেরও একটা বক্তব্য আছে। আমি তাদের হয়ে বলেছিলাম, যে এটা বাড়বে না।
“এটা দুঃসাধ্য কাজ না, যদি আমরা সঠিক রাস্তায় থাকি। এবং সঠিক সময়ে সঠিক কাজটা করতে পারি তাহলে সেটা সম্ভব।”
খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য দেওয়া বিশেষ সুবিধার কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, কিন্তু ১৪-১৫ শতাংশ সুদ দিয়ে খেলাপিরা ঋণ শোধ করে শেষ করতে পারবে না।
“কারণ, একদিকে সুদ দেয়, অন্য দিকে এটা বাড়তে থাকে। এটা দিয়ে কুলাতে পারে না। ”
সুদ হার কমালে মন্দ ঋণ স্বাভাবিকভাবেই কমে যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।