এসডিজি বাস্তবায়নে ‘অর্থ ঘাটতি’ নিয়ে আলোচনা হবে বিডিএফ সম্মেলনে 

আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ‘বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম (বিডিএফ) সম্মেলন ২০২০’ আয়োজনে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়নে অর্থ ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরে বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব রাখতে চায় বাংলাদেশ।

জাফর আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2019, 04:31 AM
Updated : 19 Nov 2019, 04:31 AM

দুই বছর পর আগামী ২২-২৩ জানুয়ারি দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন আয়োজিত হবে ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছে আয়োজক সংস্থা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

এর আগে ২০১৮ সালের ১৭-১৮ জানুয়ারি সর্বশেষ বিডিএফ সম্মেলন হয়েছিল।

ইআরডির যুগ্ম সচিব ও ডেভেলপমেন্ট ইফেক্টিভনেস উইংয়ের প্রধান আব্দুল বাকি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগামী জানুয়ারির ২২-২৩ দুই দিনব্যাপী বিডিএফ সম্মেলনের প্রস্তুতি তারা শুরু করে দিয়েছেন।

“ইতোমধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিও নেওয়া হয়েছে। আর উন্নয়ন অংশীদারদের (দাতা) জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

আওয়ামী লীগের নতুন সরকার গঠনের পর এটি হবে প্রথম বিডিএফ সম্মেলন।

আর তাই এতে সরকারের ‘উন্নয়ন’ কর্মকাণ্ড প্রাধান্য পাবে উল্লেখ করে আব্দুল বাকি বলেন, “এবারের বৈঠকে আমরা দাতাদের কাছে আমাদের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার খসড়া তুলে ধরব।“

সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন ও সরকারের অগ্রাধিকারগুলোও দাতাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে।

বৈঠকে দাতাদের সংগঠন লোকাল কনসালটেটিভ গ্রুপের (এলসিজি) পক্ষে জাতিসংঘ আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো এবং সরকারের পক্ষে ইআরডি সচিব মো. মনোয়ার আহমেদ কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করবেন।

ইআরডির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “এবারের বৈঠকে বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা (জাইকা) সহ উন্নয়ন সহযোগিদের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করবেন।”

২০১৮ সালের বিডিএফ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

এবারের বিডিএফ সম্মেলনে একটি মূল প্রতিপাদ্য সেশন এবং আটটি ওয়ার্কিং সেশন পরিচালনা করা হবে।

আব্দুল বাকি  বলেন,  “আমরা এবার মূলত দাতাদের কাছে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চার বছরের অর্জনগুলো উন্নয়ন অংশীদারদের কাছে তুলে ধরব।।

“আর অষ্টম পঞ্চবার্ষিক নতুন পরিকল্পনায় আমরা কোন বিষয়গুলোকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছি এসব বিষয় দাতাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে।”

চলমান সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা আগামী বছরের জুনে শেষ হবে। এরপর থেকে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হবে।

২০২১ সালে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) দাতাদের কাছ থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ৮০০ কোটি ডলার (৮ বিলিয়ন) গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের বলে জানিয়েছে ইআরডি। 

এবারের সম্মেলনে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের বিষয়ে দাতাদের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত কত সম্পদের প্রয়োজন তাও দাতাদের সামনে তুলে ধরা হবে বলে জানান ইআরডির যুগ্ম সচিব ।

তিনি বলেন, “উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে আমাদের পরিকল্পিত উন্নয়নের লক্ষ্যগুলো নিয়ে দাতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। তাই এবার সবচেয়ে বেশি আলোচনায় থাকবে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা।

“২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার ৮০ লাখ কোটি টাকার প্রয়োজন হতে পারে। এসডিজি বাস্তবায়নে ডেভেলপমেন্ট পার্টনার্সদের যে ভূমিকা থাকার কথা ছিল, এ পর্যন্ত তাতে কিছু ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।“

এসডিজিতে ২০৩০ সালের মধ্যে যেসব কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য রয়েছে তার জন্য সরাসরি  বিদেশি বিনিয়োগ দরকার বলে জানান আব্দুল বাকি।

“কিন্তু বাস্তবে সেসবের কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সম্মেলনে এ ঘাটতির কথা তুলে ধরা হবে সম্মেলনে।”

তিনি বলেন, “এই বিপুল পরিমাণ অর্থে কীভাবে কারা কত সম্পদের জোগান দেবে, তার একটি রূপরেখা তৈরির চেষ্টা করা এ সম্মেলনের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।”

এক সময়ের ‘প্যারিস কনসোর্টিয়াম’ রূপান্তরিত হয়ে ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম (বিডিএফ) নামে পরিচিত হয়।