জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধে এক সাথে আওয়াজ তোলার আহ্বান অর্থমন্ত্রীর

অর্থ পাচার এবং জঙ্গি অর্থায়ন প্রতিরোধে বিশ্বের সব দেশকে এক সঙ্গে মিলে পরিকল্পনা গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2019, 06:13 PM
Updated : 17 Nov 2019, 06:13 PM

রোববার ঢাকা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ‘ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যান্ড কমবেটিং ফাইন্যান্সিং অব টেরোরিজম’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঞ্চালনায় এ আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা দূতাবাসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

তাদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এখানে যুক্তরাষ্ট্র, অষ্ট্রেলিয়া ও কানাডার প্রতিনিধিরা উপস্থিত আছে; আমি আমার বন্ধুদের অনুরোধ জানাচ্ছি, আসুন আমরা অর্থ পাচার এবং জঙ্গি অর্থায়নের বিরুদ্ধে সমন্বিতভাবে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করি।

“আমরা একা করার চেয়ে সবাই মিলে অর্থ পাচার ও জঙ্গি অর্থায়নের বিরুদ্ধে কার্যক্রম গ্রহণ করলে অনেক বেশি কার্যকর হবে।”

মুস্তফা কামাল বলেন, “চলুন, আমরা হাতে হাত রেখে জঙ্গি অর্থায়ন ও মুদ্রা পাচারের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা গ্রহণ করে এই পৃথিবীটা সাধারণ মানুষের জন্য শান্তিময় করে তুলি।

“জাতিসংঘ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। এরসঙ্গে সমন্বয় করে আমাদেরও কার্যক্রম গ্রহণ করা উচিত। আমরা এক সাথে অর্থ পাচার ও জঙ্গি অর্থায়নের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি এবং এ বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করি।”

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন,  “বিশেষ করে গত চার-পাঁচ বছর ধরে জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ করতে আমি বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে কাজ করেছি।

ঢাকার হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে রোববার মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে প্রণীত জাতীয় কৌশলপত্র ২০১৯ উন্মোচন অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

“এসময় আমি দেখেছি পশ্চিমা একটি দেশ থেকে ধর্মীয় মূল্যবোধের অপব্যবহার করে অর্থ পাচার করে এনে বাংলাদেশের জঙ্গি অর্থায়নে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু আমরা শত চেষ্টার পরেও সেই দেশটিকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি।”

দেশটির নাম অপ্রকাশিত রেখেই তিনি বলেন, “দেশটি নিজেই সমস্যায় পড়ে এখন অনেক দেরিতে উপলব্ধি করেছে। এই উপলব্ধি যদি অনেক আগে আসত তাহলে আমাদের অনেক ক্ষতি সামাল দিতে পারতাম।”

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট প্রধান আবু হেনা মো. রাজি হোসেন মূল প্রবন্ধে বলেন,  “২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে মোট বাণিজ্যের ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ পাচার হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থপাচারের গড় হচ্ছে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ।”

এই বিপুল অর্থ  ‘মিথ্যা তথ্য’ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পাচার হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়,  “বাংলাদেশ থেকে ওভার ইনভয়েসিং এবং কম করের আমদানি পণ্য ও সেবা আমদানির ঘোষণা দিয়ে অর্থ পাচার হয়েছে। যেমন মূলধনী যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, কম্পিউটার এক্সেসরিজ, সফটওয়ার এবং শিল্প স্থাপন।”

অনুষ্ঠানে দেশ থেকে অর্থ পাচার রোধে ১১টি কৌশল নির্ধারণ করা হয়।

অর্থমন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনের এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম।