বুধবার উন্নয়ন সহযোগী দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা জানান মন্ত্রী।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য অধ্যাপক শামসুল আলম বক্তব্য রাখেন।
ঢাকার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠকে ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন। ইউএনডিপির প্রতিনিধিও এতে ছিলেন।
বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম বদ্বীপ রাষ্ট্র। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এই বদ্বীপটি চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। এই ঝুকি থেকে দেশ এবং দেশের মানুষকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বদ্বীপ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
“জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশেষ করে আমাদের গ্রামের মানুষগুলো বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জলবায়ু পরিবর্তনে আমাদের ভূমিকা না থাকলেও আমরাই বেশি ঝুঁকিতে পড়েছি। তাই দেশের সাধারণ মানুষকে রক্ষা করার জন্যই সরকার এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
“এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। এই বিপুল ব্যয়ের একটা অংশ বৈদেশিক সহায়তা থেকে আহরণ করতে চাই। কিন্তু তারা যদি আমাদের সহায়তা দিলে ভালো, না দিলে আমাদের নিজস্ব সম্পদ দিয়েই আমরা এগিয়ে যাব।”
মন্ত্রী বলেন, বদ্বীপ পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের সামাজিক সংস্কৃতিক শিক্ষা ও যোগাযোগসহ সমন্বিত উন্নয়ন করা হবে। এই উন্নয়ন দেশের সকল ক্ষেত্রে ছুয়ে যাবে” যোগ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বদ্বীপ পরিকল্পনা আমাদের উন্নয়নের নির্দেশনামূলক দলিল। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগসহ সকল খাতের সঙ্গে সমন্বয় করে এই মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। দীর্ঘ মেয়াদী এই মহা পরিকল্পনা ৮০টি প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।”
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, গত চার বছর আগে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় করে বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বদ্বীপ পরিকল্পনার মাধ্যমে খাতভিত্তিক ব্যয়ের রূপরেখা দেওয়া হবে। এরসঙ্গে টেকসই উন্নয়ন ও “ভিশন ২০৪১” প্রেক্ষিত পরিকল্পনাকে সমন্বয় করে বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে বদ্বীপ পরিকল্পনার জন্য জিডিপি’র ১ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের বাজেটে এটা জিডিপির ১ দশমিক ৫ শতাংশ। পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে বেড়ে ২০২৫ সালে এই বরাদ্দ জিডিপির ২ শতাংশে উন্নীত হবে।
গত অর্থবছর পর্যন্ত দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা।
অনুষ্ঠানে উন্নয়ন সহযোগীরা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বদ্বীপ পরিকল্পনা একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নদী দূষণ এবং নদী দখল রোধ করা।
তারা বলেছেন, উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে অর্থায়নে যথা সম্ভব চেষ্টা থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশের বেসরকারি খাতকে এরসঙ্গে যুক্ত করতে হবে। বেসরকারি খাতকে জড়িত করতে পারলে অর্থায়ন সমস্যা হবে না।