সংস্কারে বাধা আমলাতন্ত্র: পরিকল্পনামন্ত্রী

বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্রকে বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান; যিনি নিজেও একজন সাবেক আমলা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2019, 06:41 PM
Updated : 17 Oct 2019, 06:41 PM

দারিদ্র্য ও বৈষম্য কমাতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের গুরুত্ব নিয়ে বৃহস্পতিবার এক সংলাপে নিজের মত প্রকাশ করেন মান্নান।

তিনি বলেন, “আমাদের দেশে প্রত্যেকটা জায়গায় বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার দরকার। কিন্তু মোর ডিফিকাল্ট।

“ভূমি এবং আমলাতন্ত্র, এই দুটি এখন প্রতিষ্ঠান নয়। এগুলো এখন দর্শন হয়ে গেছে। ইউ ক্যান্ট চেঞ্জ দর্শন। আমলাতন্ত্র এদেশের দর্শন হয়ে গেছে। যে কোনো সরকারের এখানে হাত দেওয়া মোর ডিফিকাল্ট হয়ে গেছে।”

তবে ধীরে ধীরে হলেও সংস্কারের উদ্যোগ চলমান জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “রুলস অব বিজনেস ভয়ংকর জিনিস, ওইটা ব্যান (নিষিদ্ধ) করার জন্য প্রয়াস চালানো হচ্ছে।”

প্রশাসনে সংস্কারে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে সাবেক সচিব আকবর আলি খানের নেতৃত্বে রেগুলেটরি রিফর্মস কমিশন হয়েছিল। ওই কমিশনের কিছু সুপারিশ বাস্তবায়িত হলেও পরে তা বেশিদূর এগোয়নি বলে হতাশা প্রকাশ করেন আকবর আলিও।

সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের বৈষম্য কোথায়’ শীর্ষক এই সংলাপে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৈষম্য এখন সারা বিশ্বেই বাড়ছে।

“কিন্তু আমাদের সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষুধা দূরীকরণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচি পালন করেছে। তাই দেশের দারিদ্র্য হার ৪০ শতাংশ থেকে ২১ ভাগে নেমে এসেছে।”

বহুজাতিক বেসরকারি সংস্থা ‘অক্সফাম’ আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার উপদেষ্টা মির্জ্জা এবি আজিজুল ইসলাম ও সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদও বক্তব্য রাখেন।

অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে বৈষম্য বাড়ার প্রবণতাকে স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেন মির্জ্জা আজিজ।  

তিনি বলেন, এই বৈষম্য দূর করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার দরকার। এজন্য অর্থবছরভিত্তিক নীতি গ্রহণ করতে হবে।

“যেমন বর্তমানে দেশে পরোক্ষ কর হার প্রায় ৬০ শতাংশ। এটা মূলত সাধারণ মানুষের উপর চাপানো হয়। এই কর কমিয়ে প্রত্যক্ষ কর বাড়িয়ে বৈষম্য কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে।”

এছাড়া শিক্ষা ও সেবা খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শও দেন তিনি।

সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “দেশে খেলাপি ঋণ নিয়ে অন্যায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ভালো ব্যবসায়ীরা ১৩/১৪ শতাংশ সুদ দিয়ে ঋণ পরিশোধ করছেন। আর মন্দ ব্যবসায়ীরা খেলাপি হয়ে মাত্র ২ শতাংশ পাওনা পরিশোধ করে মাত্র ৯ শতাংশ সুদে ঋণ পাচ্ছে। এটা অন্যায়।”